সিইসির সঙ্গে বৈঠকের পর যা বলল বিএনপি
Published: 9th, February 2025 GMT
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৈঠক শেষে আজ রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে বিএনপি সন্তুষ্ট বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময় ঘোষণার দায়িত্ব এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। যেহেতু সংবিধান ও প্রচলিত আইনের ভিত্তিতে দেশ পরিচালিত হচ্ছে না।
আগামীকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে বিএনপি আলোচনা করবে বলেও এ সময় জানান তিনি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই (নির্বাচন অনুষ্ঠান) ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখন তাদের (কমিশন) নেই। কারণ দেশের প্রচলিত সংবিধান-আইন হলে একটা সরকার পদত্যাগ করলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। এখন তো ওই আইনের দেশ চলছে না। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক মতামত, সরকারের তরফ থেকেও অনুরোধ করতে হবে—তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন ঘোষণার দায়িত্ব এখন সরকারের; অর্থাৎ কখন হবে এটা বলা, তারপর তফসিল ঘোষণা তো নির্বাচন কমিশনই করবে। আগামীকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের আলোচনা আছে। আমরা সেখানে প্রসঙ্গ টেনে আলোচনা করব।’
নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, প্রায় ৩০ লাখ নতুন ভোটার আগামী দিনে যুক্ত হবে। যেটা তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল, তাদের আগে ভোটার করা হয়নি। বাদ পড়বে প্রায় ১৫ লাখ, যারা মারা গেছেন। এই তালিকা করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু নিবন্ধনের ভিত্তিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এতটুকু বুঝেছি যে, যদি মে-জুন মাসের মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রস্তুত হয়, তাহলে প্রাসঙ্গিক আলোচনা করে সমস্যা দূর করে শিগগির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপি সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আইন অনুযায়ী তাদের যা করার কথা, আমরা বুঝতে পারছি যে, তারা সঠিকভাবেই সেটা করছেন।’
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল।
নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও সেলিমা রহমান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ নজর ল ইসল ম খ ন সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।