যুবদল নেতা তৌহিদ হত্যা: এক সপ্তাহেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ
Published: 10th, February 2025 GMT
কুমিল্লায় বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে তৌহিদুল ইসলাম নামের এক যুবদল নেতাকে হত্যার ঘটনায় এক সপ্তাহেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ দাবি করেছে, মামলার আসামিদের কেউ এলাকায় নেই, গা ঢাকা দিয়েছেন তারা। তাই তাদের গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এদিকে খুনিদের বিচার দাবি করে আসামিদের ছবি দিয়ে নগরীর দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এতে ফাঁসি দাবি করে আসামি তানজিল, সাইফুল, খাইরুল ও নাজমুলের ছবি প্রকাশ করা হয়।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মামলার অভিযোগে ৬ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন, জেলার আদর্শ সদর সদর উপজেলার পাচথুবি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর (পান্ডানগর) গ্রামের সাইফুল ইসলাম, নিহত তৌহিদুলের প্রতিবেশী ও ইটাল্লা গ্রামের তানজিল উদ্দিন, নাজমুল হাসান টিটু, খাইরুল হাসান মাহফুজ, সাইদুল হাসান সবুজ ও একই উপজেলার বামইল গ্রামের সোহেল। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তৌহিদের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ সমকালকে বলেন, আমরা মামলা করেছি ৭ দিন হলো। এখনও মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। মামলা করে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করছি।
তবে মামলায় ৩ ছেলে নাজমুল, খাইরুল ও সাইদুলকে আসামি করায় বিস্ময় প্রকাশ করে তাদের বাবা মোক্তল হোসেন বলেন, আমার ৩ সন্তান তৌহিদুলের পরিচিত। তারা তাকে হত্যা ও নির্যাতনে জড়িত ছিল না। মামলার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি আমি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, মামলার আগেই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান, তাই পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অভিযান চলমান আছে।
নিহতের পরিবার জানায়, তৌহিদুলের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে মামলার আসামিদের সঙ্গে এলাকায় একাধিকবার সালিশ হয়। এ নিয়ে তৌহিদুলকে হত্যার হুমকি দেন আসামিরা। গত ৩০ জানুয়ারি মধ্যরাতে মামলায় অভিযুক্তরা পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০/২৫ জনকে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে যুবদল নেতা তৌহিদ ও প্রতিবেশী লুৎফুর রহমানকে উঠিয়ে নিয়ে যান। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একই ব্যক্তিরা আবারো আহত তৌহিদ ও লুৎফুরকে নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরে তল্লাশি করে।
এ সময় আটক লুৎফুর রহমানকে ছেড়ে দিলেও তৌহিদকে নিয়ে তারা চলে যায়। পরে তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় তৌহিদকে গোমতী বাঁধের ঝাঁকুনিপাড়ায় ফেলে যান। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত তৌহিদ জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি শিপিং কোম্পানিতে চাকরি করতেন। গত ২৬ জানুয়ারি তার বাবা মারা যাওয়ার খবরে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। তৌহিদুলের মারা যাওয়ার দিন ছিল বাবার কুলখানির আয়োজন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যুবক গ্রেপ্তার, চুরির ২০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানা পুলিশ প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণসহ মেহেদী হাসান (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ রবিবার (১৫ জুন) সকালে পৌর এলাকার সড়ক বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণগুলো একদিন আগে পৌর এলাকার দুর্গাপুরের একটি বাড়ি থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণের সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন জানান, মেহেদী হাসান নামে ওই যুবক স্বর্ণ বিক্রির জন্য ঘোরাঘুরির খবরে তাকে আটক করা হয়। এরপর তার কাছ থেকে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়, যা চুরি হওয়ার ভুক্তভোগী পরিবার তাদের বলে চিহ্নিত করেছেন। ওই বাড়ি থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ চুরি হয় বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, তদন্ত করে ওই যুবকই চুরি করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিকেল নাগাদ জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজে চুরির কথা স্বীকার করছেন না। পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হবে। মেহেদী হাসানের বাড়ি কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে।
আরো পড়ুন:
কারাগারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
আদালত চত্বর থেকে হ্যান্ডকাফসহ পালানো দুই আসামি গ্রেপ্তার
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্গাপুরের টিপু মিয়ার বাড়ির দোতলা থেকে গত শুক্রবার (১৩ জুন) রাত থেকে শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টার মধ্যে কোনো এক সময় চুরি হয়। চোর বা চোরের দল বাড়ির দোতলার বাথরুমে এগজস্ট ফ্যান ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলমারি থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় টিপু মিয়ার স্ত্রী শান্ত আক্তার থানায় লিখিত অভিযোগ করে। রবিবার সকালে পুলিশ খবর পায় যে এক যুবক স্বর্ণ বিক্রির জন্য কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘুরছেন। চুরির ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক তিন কিলোমিটার দূরে সড়ক বাজার এলাকায় তিনি বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। এ সময় তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে তল্লাশি চালালে প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বাকি স্বর্ণ উদ্ধারে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/পলাশ/বকুল