বাগেরহাটের কচুয়া ও চিতলমারী উপজেলায় বিএনপির সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়ন ও চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরে দেপাড়া বাজার এলাকায় দুই সভাপতি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ধোপাখালী ইউনিয়ন বিএনপির এক সভাপতি প্রার্থীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সভাপতি প্রার্থী মো.

লিয়াকত হোসেনকে বাগেরহাটের ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে এবং তাঁর ভাই শওকত হোসেন ও যুবদল নেতা জুয়েল রানাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসাধীন লিয়াকত হোসেন বলেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আফজাল হাওলাদারের নেতৃত্বে কাদের, আলমগীর, শিমুল, শ্রমিক লীগ নেতা সুমন, আফজাল হাওলাদার, হেদায়েত, ইস্কান্দারসহ ২৫-৩০ জন তাঁদের ওপর হামলা করেন। এতে তাঁদের ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সভাপতি প্রার্থী আফজাল হোসেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে তিনি বা তাঁর কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নন। জানতে চাইলে কচুয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব এস এম তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হামলার খবর শুনেছি। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওই ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে চিতলমারী উপজেলায় কলাতলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চরচিংগুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় কিবরিয়া মাস্টার ও মোস্তাফিজুর রহমান কচির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন কিবরিয়া মাস্টার পক্ষের আরিফুজ্জামান (৪৫), দবির শেখ (৪০), ভুলু মোল্লা (৫০) ও আব্দুল আলী (৩০) এবং মোস্তাফিজুর রহমান পক্ষের খাদিজা বেগম (২৯), ইউনুছ শেখ (৫৫), ওসমান শেখ (৪০), কদম আলী (৪৫) ও শাহিদা বেগম (৩৫)। আহতদের উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাশের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। কিবরিয়া মাস্টারের অভিযোগ, মোস্তাফিজুর রহমানের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। এতে তাঁদের ছয় থেকে সাতজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে মোস্তাফিজুর রহমানের ভাষ্য, নির্বাচনে তাঁর পক্ষের লোকজন জয়লাভ করেছে। এটা শুনতে পেয়ে কিবরিয়া মাস্টারের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা করে সাত থেকে আটজনকে গুরুতর জখম করেছে।

চিতলমারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোমিনুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘সম্মেলন কেন্দ্রের ৫০০ গজের মধ্যে কোনো ঘটনা ঘটেনি। কলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী কিবরিয়া মাস্টারের ছেলে ও তাঁর লোকজনের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত। যদি বিএনপির কেউ জড়িত থাকে, তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

চিতলমারী থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ত ফ জ র রহম ন র ল কজন ব যবস থ স ঘর ষ ক বর য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে চার আসন বহালের দাবিতে নতুন কর্মসূচি 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। আগামী শুক্র ও শনিবার (১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর) গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং রবি ও সোমবার (২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর) জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অর্ধদিবস অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা এম এ সালাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এম এ সালাম বলেছেন, “বাগেরহাটের চারটি আসন অক্ষুণ্ন রাখার দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা আছে, তবে জনগণের দাবি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”

এর আগে আসন কমানোর প্রতিবাদে জেলা জুড়ে হরতাল, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে।

ঢাকা/শহিদুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ