আলফাডাঙ্গায় তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে দুই দফা সংঘর্ষ, আহত ২
Published: 11th, February 2025 GMT
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দফা সংঘর্ষে কলেজ ছাত্রসহ দুই যুবক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা গোপালপুর ইউনিয়ন বোর্ড অফিসের সামনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রথম দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে কলেজ ছাত্রসহ উভয় পক্ষের দুইজন গুরুতর আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে এক পক্ষের লোকজন হামলা করে আহত ব্যক্তিকে গুরুতর আহত করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। উভয় পক্ষের আহত দুই ব্যক্তিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর কুচিয়াগ্রামের সাঈদ ফকিরের ছেলে মোহাম্মাদ ফকিরসহ (২৪) তিন সহদর জন্মনিবন্ধন করার জন্য কাগজপত্র নিয়ে অটোভ্যান যোগে গোপালপুর বোর্ড অফিসের সামনে গেলে একই ইউনিয়নের কামারগ্রামের হানিফ রেজা ছেলে আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি শাখার শিক্ষার্থী রিফাত হোসেনসহ (২৫) সহপাঠীরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় মোহাম্মাদ ফকিরের অটোভ্যানচালক হর্ন দেওয়া নিয়ে চালকের সঙ্গে রিফাতদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রিফাত হোসেন ও মোহাম্মদ ফকিরদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় মোহম্মাদ ফকির রিফাত হোসেনের বাম পাশের কান কামড়িয়ে কিছু অংশ তুলে ফেলেন। পরে আহত অবস্থায় রিফাতকে সহপাঠীরা আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনেন। এর কিছুক্ষণ পর আহত মোহাম্মাদকে তার ভাইয়েরা হাসপাতালে আনলে এসময় রিফাতের বন্ধুরা তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আহত মোহাম্মাদ গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের দুইজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ওসি হারুন অর রশিদ জানান, হাসপাতালে হামলার ঘটনা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। কোনো পক্ষ থেকে এখন কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলফ ড ঙ গ স ঘর ষ র আহত
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস