গাজা নিয়ে ট্রাম্পের হুমকির নিন্দা জামায়াতের
Published: 12th, February 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া হুমকির নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ ধরনের হুমকি অন্যায়, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করে দলটি।
আজ বুধবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরের মধ্যে গাজায় আটকে রাখা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দিলে ‘গাজা জাহান্নাম হয়ে যাবে’ বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন। এ হুমকি দিয়ে তিনি আবার মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির আগুন জ্বালানোর ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, ইসরায়েলিরা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় হামাস বন্দী মুক্তি স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজাকে ‘জাহান্নাম’ বানানোর হুমকি দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর এ হুমকি সম্পূর্ণ অন্যায়, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। তাঁর এ উসকানিমূলক হুমকিতে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ হতবাক ও বিস্মিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যে গোটা বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং আরব দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে মনে করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করার বিষয়ে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা।
আরও পড়ুনহামাসের জন্য নরকের সব দরজা খুলে দেওয়ার সময় এসেছে: ইসরায়েলের মন্ত্রী২০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’
আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।