ফিলিস্তিনের গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া হুমকির নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ ধরনের হুমকি অন্যায়, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করে দলটি।

আজ বুধবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরের মধ্যে গাজায় আটকে রাখা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দিলে ‘গাজা জাহান্নাম হয়ে যাবে’ বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন। এ হুমকি দিয়ে তিনি আবার মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির আগুন জ্বালানোর ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, ইসরায়েলিরা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় হামাস বন্দী মুক্তি স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজাকে ‘জাহান্নাম’ বানানোর হুমকি দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর এ হুমকি সম্পূর্ণ অন্যায়, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। তাঁর এ উসকানিমূলক হুমকিতে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ হতবাক ও বিস্মিত।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যে গোটা বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে এবং আরব দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে মনে করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের হুমকি দেওয়া থেকে বিরত থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করার বিষয়ে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা।

আরও পড়ুনহামাসের জন্য নরকের সব দরজা খুলে দেওয়ার সময় এসেছে: ইসরায়েলের মন্ত্রী২০ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ