‘তোর দুই নাতির মাথার দাম তিন লাখ টাকা, পুলিশ জানলে চলবে গুলি’
Published: 13th, February 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উড়ো চিঠিতে রেজাউল ইসলাম (৫৭) নামের এক গামছা বিক্রির হকারের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে টাকা না দিলে বা পুলিশকে জানালে হকারসহ তার দুই নাতিকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে গেল দুই মাসে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে উড়ো চিঠিতে তিনবার চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী রেজাউল উপজেলার সদকী ইউনিয়নের বাটিকামারা এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি ফুটপাতে গামছা বিক্রি করে সংসার চালান। এ ঘটনায় রেজাউল আজ দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে রেজাউল উল্লেখ করেন, ‘আমি একজন ফুটপাতে গামছা বিক্রি করি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত কে বা কারা আমার বাড়ির জানালা ভেঙে দেয়। জানালা ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে বাইরে এসে দেখি যে, অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে লেখা একটি চিঠি। চিঠিতে আমার কাছে তিন লাখ দাবি করা হয়েছে। রাত ১২টার মধ্যে টাকা না দিলে দুই নাতিকে হত্যা করা হবে। বিষয়টি পুলিশ অথবা কাউকে জানালে আমাকেও গুলি হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া- রাজবাড়ি সড়ক থেকে ২০০ মিটার নিচে হকার রেজাউলের চার কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেডের আধপাকা ঘর। সেখানে স্ত্রী, ছেলে, ছেলের স্ত্রী, মেয়ে, ২ নাতিসহ সাতজনের বসবাস। ঘরের একটি কাঁচের জানালা ভাঙা।
এ সময় রেজাউলের মেয়ে রিমা খাতুন বলেন, ‘কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। তবুও কে বা কারা চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। গত রাতসহ গেল দুই মাসে তিনবার এ ঘটনা ঘটেছে। এতে আমরা আতঙ্কিত।’
বুধবার রাতে দুর্বৃত্তদের ফেলে যাওয়া চিঠিটি সমকালের হাতে এসেছে। চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘ভয় নাই, আজ মারবে নানে। চলে গেলাম। তোর দুই নাতি ছেলের মাথার দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ টাকা। আগামীকাল রাত ১২টার মধ্যে তিন লাখ টাকা নিয়ে চলে আসবি। আর এটা আমার এলাকা। তাই পুলিশ বা অন্য কোনো ঝামেলা না করলে তোর ভালো হবে। আর যদি কিছু করিস তাহলে, রেজাউল তুই বাড়ির বাইরে আসলে আগে তোকে পাখির মতো গুলি করে মারবে, মনে রাখিস। আজ গুলি করলে মারতে পারতাম। কিন্তু মারিনি, একটা সুযোগ দিলাম। মনে রাখিস আগামীকাল রাত ১২টার মধ্যে টাকা নিয়ে চলে আসবি।’
ভুক্তভোগী রেজাউল বলেন, ‘কারা, কেন এমন করছে জানি না। পরিবার নিয়ে খুব ভয়ে আছি। বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এর আগে ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম ‘
উড়ো চিঠিতে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির বিষয়ে লিখিত অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন কুমারখালী থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’