সিলেট বন বিভাগের উদ্যোগে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে টাঙ্গুয়ার হাওর ওয়াচ টাওয়ারসংলগ্ন এলাকায় ৪০ হাজার হিজল ও করচ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। বুধবার দিনভর বৃক্ষরোপণ ও প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। 
টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায় বৃক্ষরোপণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড.

মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম ও উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। 
তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, মোয়াজ্জেমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী এ বৃক্ষরোপণ কাজে অংশ নেয়। 
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স সার্ভিস (সিএনআরএস)-এর সুনামগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী ইয়াহিয়া সাজ্জাদ বলেন, বর্ষায় পানি ও ঢেউয়ের আঘাত হিজল-করচ গাছের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আবার এসব গাছের বৃদ্ধিতে কোনো প্রকার জৈব অথবা রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না। 
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, হাওরে বনায়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পাখির আবাসস্থল সৃষ্টি হবে, জলজ জীববৈচিত্র্যের সমৃদ্ধি বাড়বে, সুফলভোগীদের প্রতি বছর বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে, বসতভিটার ভূমি ক্ষয়ের মাত্রা কমবে। 
সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বনায়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে টাঙ্গুয়ার হাওরে ৪০ হাজার জলজবৃক্ষ হিজল, করচ গাছ রোপণ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন গাছগুলোকে দেখে রাখে ও যত্ন নেয় এজন্যই তাদের বৃক্ষরোপণ কাজে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রতি গাছে শিক্ষার্থীদের নেমট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হবে। তারা যেন বলতে পারে এ গাছটি আমি লাগিয়েছি।
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ