গ্রহ প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ছে চীন
Published: 14th, February 2025 GMT
গ্রহ প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন করছে চীন। গ্রহাণুর আঘাত থেকে পৃথিবী রক্ষায় এ বাহিনী কাজ করবে। ২০৩২ সালে পৃথিবীতে একটি গ্রহাণু আঘাত হানার আশঙ্কার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। এ ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে চীনের পক্ষ থেকে বিশেষ এ প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ বাহিনীতে জনবল নিয়োগ দিতে অনলাইনে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এ সপ্তাহে চীনের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ফর ন্যাশনাল ডিফেন্স (এসএএসটিআইএনডি) এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মহাকাশ প্রকৌশল, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং গ্রহাণু শনাক্তকরণ বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নকারীরা আবেদন করতে পারবেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ২০২৪ ওয়াইআর ফোর নামের গ্রহাণুটিকে তাদের সর্বোচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রেখেছে। এ গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা ১ দশমিক ৩ থেকে ২ দশমিক ২ শতাংশ। জাতিসংঘের মহাকাশ পরিকল্পনা উপদেষ্টা গ্রুপ চীনসহ মহাকাশ কর্মসূচিতে যুক্ত থাকা দেশগুলোকে নিয়ে এ গ্রহাণু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
চীনের উইচ্যাটে প্রকাশিত চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে ১৬টি পদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্ল্যানেটারি ডিফেন্স ফোর্স বা গ্রহ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগ হবে। ৩৫ বছরের কম বয়সী স্নাতক পাস ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য কারিগরি ও পেশাদারি দক্ষতা প্রয়োজন হবে। এর পাশাপাশি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থক হতে হবে। চীনের এ চাকরির বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ইতিমধ্যে অনলাইনে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
চীনের মহাকাশ খাত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রহাণু পর্যবেক্ষণের দিকে আরও গুরুত্ব দিতে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে এসএএসটিআইএনডি কোনো মন্তব্য করেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।