জাতিসংঘের প্রতিবেদনে অপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে জাতি আশান্বিত: বিবৃতিতে জামায়াতের আমির
Published: 15th, February 2025 GMT
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ‘সত্যতা’ উদ্ঘাটিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশেই যে গত জুলাই-আগস্টে সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত হলো। এতে গোটা জাতি স্বস্তিবোধ করছে এবং অপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আশান্বিত হয়েছে।
আজ শনিবার এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে জামায়াতের আমির বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে যে অমানবিক ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তারই স্বীকৃতি পাওয়া গেল জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে। খুনি ও খুনিদের মাস্টারমাইন্ডদের তথ্য ও পরিচয় এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জাতিসংঘ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছে। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে ‘সত্য’ উদ্ঘাটিত হওয়ায় আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে জামায়াতের আমির আরও বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট হয়েছে, খুনি শেখ হাসিনার নির্দেশেই দেশে সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত ও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। খুনিদের মাস্টারমাইন্ড ও তার দোসরদের মাধ্যমেই দেশের নাগরিকদের ওপর অকথ্য জুলুম-নির্যাতন, গুম এবং চরম বীভৎস ও রোমহর্ষক গণহত্যা চালানো হয়েছে। লাশ স্তূপ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আয়নাঘর বানিয়ে দেশের মানুষকে গুম ও পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘মজলুমের পক্ষে নয়, বরং মজলুম বিষয়ে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন গণহত্যার দলিল হয়ে থাকবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সব গণহত্যাকারী এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ মনে করে, গণহত্যার অপরাধে অপরাধী হিসেবে আওয়ামী লীগের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। এই জন–আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবির বিষয়টিও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিবেচনায় নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণহত য র আম র অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।