এক বছর আগেই বিয়ে করেছেন শানারেই দেবী শানু
Published: 16th, February 2025 GMT
লাক্স তারকা থেকে অভিনয়ে শানারেই দেবী শানু। এখন পুরোপুরো যেনো লেখক তিনি। প্রতি বইমেলাতেই বই প্রকাশ করেন। নতুন খবর হচ্ছে এই অভিনেত্রী বিয়ে করেছেন। পাত্র মাহবুব জামিল পুলক। পেশায় প্রকৌশলী হলেও লেখালেখি করেন। এই লেখালেখির সূত্রধরেই একে অপরের পরিচয় ও একসঙ্গে পথ চলা।
বিয়ের খবর শানু নিজেই জানিয়েছেন। অভিনেত্রী ভাষ্যে, তারা গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছেন। তবে এতদিন বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেননি।
শানু বলেন, ‘গত বছরে আমরা বিয়ে করেছি। এরপর ভালো একটা সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তাই এতদিন বিষয়টি আমি জানাইনি। আমার কাছের কিছু মানুষজন এটি জানেন। এখনও আমরা অস্থির সময়ের মধ্যে আছি। সংবাদমাধ্যমে অফিসিয়ালি জানাইনি। বইমেলায় একসঙ্গে উপস্থিত হওয়ায় আরও অনেকেই জেনেছেন।’
তিনি যোগ করে আরও বলেন, ‘আমি মণিপুরি সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছি। আমাদের সংস্কৃতি যেমন অনেক সম্মানের, তেমনি সেনসিটিভও। তাই ব্যক্তিগত বিষয়গুলো ভেবেচিন্তে প্রকাশ করি।’
মাহবুব জামিলের সঙ্গে পরিচয় প্রসঙ্গে শানু বলেন, ‘উনি মূলত কবি। লেখালেখি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। আমরা দুজনই শব্দের মানুষ। আমাদের ভাবনাটা মিলে যায়। আজব কারখানায় এসেই আমাদের দুজনের পরিচয়।’
ঢাকার ছেলে মাহবুব জামিল পুলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ২০১৯ সালে, তার প্রকাশিত প্রথম প্রকাশনা ‘জলপরীর নিঃশ্বাস’ বইটির মাধ্যমে।
শানারেই দেবী শানু ২০০৯ সালে প্রথম বিয়ে করেছিলেন জেভিয়ার শান্তনু বিশ্বাসকে। দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় সে সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়।
এবারের বইমেলায় শানুর রেখা ‘বাঘ মানুষ’ প্রকাশ পেয়েছে। লেখক বলেন, এটা মণিপুরি মিথলজি। লোকগাথাকে ভিত্তি করে এটি লেখা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।
পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।