বিয়ানীবাজারে অশালীন আচরণসহ নানা অভিযোগে অবরুদ্ধ এক প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানকে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে  ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। সোমবার দুপুর ১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। শিক্ষার্থীরা জানায়, অশোভন আচরণের কারণে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল।
এদিকে মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। শিক্ষক জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার, বিদ্যালয়ের ব্যাপারে এখতিয়ারবহির্ভূত সিদ্ধান্ত নেওয়া ও এককভাবে প্রতিষ্ঠানে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপনের কথা তুলে ধরেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানের অপসারণ দাবি করেন।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেও তাঁর বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেছিলেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সে সময় ইউএনও অভিযোগ তদন্ত করে দেখার পাশাপাশি ও প্রধান শিক্ষক জাহিদকে আচরণগত ত্রুটি পরিবর্তনের নির্দেশনা দেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন দুপুরে শালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানকে নিজ কার্যালয়ে অবরুব্ধ করে। এ সময় এলাকার মুরব্বি, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিগণ শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ বিদ্যালয়ে গিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় মুরব্বিসহ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। পরে রাত ৯টার দিকে প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমানকে উদ্ধার করে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মুস্তফা মুন্না জানান, বিষয়টি আচরণগত। স্থানীয় কিছু বিষয়ের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের ইস্যুটি জড়িয়ে গেছে। আপাতত প্রধান শিক্ষককে ছুটি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার স্থানীয়রা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবর দ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী

অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।

গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।

এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।

আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগে

গতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।

ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’

সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।

আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার
  • পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী