হিমাগারে আলু রাখার বুকিং স্লিপ না পেয়ে মহাসড়ক অবরোধ
Published: 18th, February 2025 GMT
গাইবান্ধায় হিমাগারে আলু রাখার বুকিং স্লিপ না পেয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার সকালে দুই দফায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরেজের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
কৃষকদের অভিযোগ, হিমাগারে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তারা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তিন দিনেই কীভাবে কার্ড শেষ হয়ে যায়। বিষয়টি রহস্যজনক। এটি তারা মানতে পারছেন না। তাদের ভাষ্য, অবিলম্বে বুকিং স্লিপ বিতরণ শুরু করতে হবে।
হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরের ম্যানেজার মোজাম্মেল হক বলেন, ‘স্টোরে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী বুকিং কার্ড করা হয়েছে। সব কার্ড বিক্রি হয়েছে। কৃষকেরা মনে করেছেন জায়গা থাকার পরও আমরা স্লিপ দিচ্ছি না। তাদের ধারণা ভুল। স্টোর ফাঁকা রেখে আমাদের লাভ কী?’
জানা গেছে, ভাড়া বাড়িয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বুকিং স্লিপ বিক্রি শুরু করেছে হিমাদ্রি কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষ। বুকিং স্লিপের জন্য যথারীতি মঙ্গলবার সকাল থেকে কৃষকরা জড়ো হতে থাকেন। সকাল ৯টার দিকে কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক জানিয়ে দেন, বুকিং স্লিপ শেষ হয়ে গেছে। এই কথা শোনার পর কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। তারা কোল্ডস্টোরেজের সামনে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। দুপুর ১২টা থেকে আবার তারা মহাসড়কের একই স্থানে দাঁড়িয়ে অবরোধ করেন। আধা ঘণ্টা অবরোধ চলার পর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম, গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে কৃষকরা অবরোধ তুলে নেন।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জের ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, কৃষকপ্রতি কমপক্ষে পাঁচ বস্তা করে আলু যাতে হিমাগারে রাখতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ গ ব ন দগঞ জ উপজ ল ক ষকর অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী