বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়েছি, তারা চেষ্টা করছেন অতি দ্রুত কিছু কাজ শেষ করে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার। কিন্তু এর মধ্যেই মানুষের মাঝে কতগুলো সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। সে সন্দেহ হচ্ছে যে, আদৌ নির্বাচনের ব্যাপারে তারা (উপদেষ্টা) আন্তরিক কিনা। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা যিনি আছেন তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তাহলে তারা অংশ নিতে পারবে। এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, তারা নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চায়। তাহলে কি আমরা মনে করব- তারা সরকারে থেকে তাদের দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন রকম কৌশল নিচ্ছে?

এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি অবিলম্বে এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিন। তা না হলে জনগণের যে আস্থা আপনাদের ওপরে আছে, সে আস্থা থাকবে না।  

বুধবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক অনুষ্ঠানে এ অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে ‘গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন ধারার রাজনীতি’শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ছাত্রদল ঢাকা মহানগরের সদস্য সংগ্রহ, ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রমে নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফরম বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।  

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি যখন প্রথম বলেছিলাম- যদি এই সরকার নিরপেক্ষতা হারায় তাহলে আরেকটি নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। কেন বলেছিলাম তা এখন প্রমাণ হচ্ছে। তখন একজন (উপদেষ্টা) বলেছিলেন- আমি এক এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক এগারোর ভুক্তভোগী, এক এগারো যারা সৃষ্টি করেছিল জনগণের কাছে তারা টিকতে পারেনি। আবারও হুশিয়ার করে বলে দিতে চাই, যদি আবার কেউ সেই এক এগারোর কথা চিন্তা করেন, গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে আবার একদলীয় শাসন ফ্যাসিস্ট সরকারের দিকে যেতে চান, তাহলে কখনও জনগণ তা মেনে নেবে না। 

বর্তমান প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এখন একটা ক্রান্তিকালের লড়াইয়ে এসে পৌঁছেছি। এই লড়াইয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য্য, সহনশীলতা এবং মেধার চর্চা করা। সাইবার যুদ্ধ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার নিজের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকারে থেকে কয়েকজন উপদেষ্টা নতুন দল গঠনের কৌশল নিচ্ছেন। সেই কৌশল নিলে আমরা তা হতে দেব না, এদেশের মানুষ তা হতে দেবে না। খুব পরিষ্কার করেই বলছি, যখন নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হবে অব্যশই আমরা সেটাকে স্বাগত জানাব। তার মানে এই নয় যে, আপনারা সরকারে বসে, সরকারের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে দল গঠন করবেন, সেটা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের মোস্তফা জামান, ছাত্রদলের পূর্বের সভাপতি সোহাগ ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র উপদ ষ ট ল ইসল ম ছ ত রদল ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: