ডিএপি সার ও ফসফরিক কিনতে ব্যয় ৩০৭ কোটি টাকা
Published: 20th, February 2025 GMT
কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার ও সারকারখানার জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড কিনতে পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৩০৭ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.
সভা সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে তৃতীয় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক সৌদি আরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। এর আগে সম্পাদিত চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান চুক্তির শর্তসমূহ অভিন্ন রেখে চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। সৌদি আরব হতে তৃতীয় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৯৯ কোটি ৮৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ৬১৪.৫০ মার্কিন ডলার।
আরো পড়ুন:
উৎপাদনে ফিরল আশুগঞ্জ সার কারখানা
চার দেশ ও স্থানীয় বাজার থেকে ৭৫৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
সভায় চট্টগ্রামের টিএসপিসিএল এর জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক এসিড ও রক ফসেফট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে মাত্র ১টি দরপত্র জমা পড়ে। দর প্রস্তাবটি কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান গুয়ানজি পেঙ্গুই ইকো-টেকনেলজি কোম্পানি লিমিটেড এই এসিড সরবরাহ করবে। এতে ব্যয় হবে ৭৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ফসফরিক এসিডের দাম ৬৩০ মার্কিন ডলার।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষ মন ত র হ জ র ম ট র ক টন স র আমদ ন দরপত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এবার আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে, ২০২৭ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের চিন্তা
এ বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিতে মাত্রাতিরিক্ত দেরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। শিক্ষাবর্ষ শুরুর প্রায় তিন মাসের মাথায় সারা দেশের সব শিক্ষার্থীর জন্য সব বিষয়ের পাঠ্যবই সরবরাহ করতে পেরেছে এনসিটিবি। আর বই পেতে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে।
এই ‘বাজে অভিজ্ঞতা’ মাথায় নিয়ে আগামী বছরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ এবার আগেভাগেই শুরু করছে এনসিটিবি। আগামী সপ্তাহেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। পর্যায়ক্রমে জুনের মধ্যে সব দরপত্রের কাজ শেষ করে আগামী মধ্যে নভেম্বরের মধ্যে সব পাঠ্যবই ছাপিয়ে মাঠপর্যায়ে পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এনসিটিবি।
বর্তমানে এনসিটিবির নিয়মিত চেয়ারম্যান নেই। এক মাসের বেশি সময় ধরে চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন সংস্থাটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেছেন, গেলবারের অভিজ্ঞতার বিবেচনা করে এবার আগেই পাঠ্যবই ছাপার কাজের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। যাতে করে আগামী বছরের শুরুতেই সব শিক্ষার্থী সব পাঠ্যবই পেতে পারে।
২০২৭ সাল থেকে পুরো শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করে তার আলোকে পাঠ্যবই দেওয়ার পরিকল্পনা করছে এনসিটিবি। প্রথম বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তা শুরু হতে পারে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন বা পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পাঠ্যবই দেয় সরকার। দেশে উৎসব করে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। তবে গত দু-তিন বছর শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ১ জানুয়ারি উৎসব করে বই বিতরণ শুরু হলেও দরপত্রসংক্রান্ত জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব নতুন বই দেওয়া যায়নি। সব বই দিতে কিছুদিন দেরি হয়েছিল। কিন্তু এবার বই দিতে মাত্রাতিরিক্ত দেরি হয়েছে। শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জনসহ কিছু সমস্যার কারণে কিছুটা ধারণা দেওয়া হলেও তা শেষ পর্যন্ত গত ২৪ মার্চ সর্বশেষ পাঠ্যবই সরবরাহের অনুমোদন বা পিডিআই দেয় এনসিটিবি। এভাবে এ বছর বই দেওয়ায় দেরি হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষা বিভাগ।
এনসিটিবির সূত্র জানিয়েছে, আগামী বছরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ আগেভাগে শুরু করতে ইতিমধ্যে অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। এরই মধ্যে মাঠ পর্যায় থেকে পাঠ্যবইয়ের চাহিদা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন সেগুলো পুনরায় যাচাই করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মাধ্যমিকের মোট পাঠ্যবইয়ের চাহিদা ২৩ কোটি ১২ লাখের মতো আসলেও পুনরায় যাচাইয়ে তা কমে ২২ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। এই সংখ্যাটি আরেকটু কমতে পারে। তবে প্রাথমিকের বইয়ের সংখ্যাটি এখনো নিরূপণ হয়নি। প্রসঙ্গত, বছরের জন্য প্রাথমিকের মোট পাঠ্যবই ছিল ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজারের মতো।
আরও পড়ুন২ মাস চলে গেল, আর কবে সব বই পাবে শিক্ষার্থীরা০৩ মার্চ ২০২৫নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এত দিন বিদ্যালয়গুলো অতিরিক্ত চাহিদা দিত। ফলে বইয়ের সংখ্যা অনেক বেশি হতো। এতে সরকারের ব্যয়ও বেশি হতো। এবার এনসিটিবির কর্মকর্তারা নিজেরাও বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে চাহিদার বিষয়টি দেখভাল করছেন। ফলে তাঁরা ধারণা করছেন আগামী বছর মোট পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা বেশ কমতে পারে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই চাহিদা নিরূপণ হয়ে যাবে।
এনসিটিবি জানিয়েছে আগামী সপ্তাহে প্রাক প্রাথমিক এবং ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার কাজের দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তাঁদের লক্ষ্য জুনের মধ্যে সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দরপত্রের কাজ শেষ করা। এই প্রক্রিয়ায় তাঁদের পরিকল্পনা হলো আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রাথমিকের সব বই ছাপিয়ে মাঠপর্যায়ে ৫৮৫টি স্থানে (পয়েন্ট) পৌঁছে দেওয়া হবে। আর মাধ্যমিকের সব বই দেওয়া হবে মধ্য নভেম্বরের।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের পাঠ্যবই ছাপার কাজের দরপত্র গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত গড়িয়েছিল।
আরও পড়ুনঅবশেষে সব বই সরবরাহ করল এনসিটিবি ০৮ এপ্রিল ২০২৫পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের উদ্যোগগত বছর পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চলেছে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী এ বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শ্রেণিতেই তা চালুর কথা ছিল; কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম বাতিল হয়ে যায়। তার পরিবর্তে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম পুনর্বহাল করা হয়। তবে প্রাথমিকে কার্যত নতুন শিক্ষাক্রমই বহাল রাখা হয়। আগামী বছরের নতুন পাঠ্যবই তার আলোকেই দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বিদ্যমান পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজও প্রায় শেষ করেছে এনসিটিবি।
তবে, পরের বছর অর্থাৎ ২০২৭ সাল থেকে পুরো শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করে তার আলোকে পাঠ্যবই দেওয়ার পরিকল্পনা করছে এনসিটিবি। প্রথম বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তা শুরু হতে পারে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন বা পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের বিষয়ে তাঁরা এখন থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু কাজ শুরু করছেন। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনপুরোনো শিক্ষাক্রমে বই, বিষয়বস্তুতে কতটা পরিবর্তন ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪