কাগজের মিনার বানিয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা
Published: 22nd, February 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুরে একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে শৌচাগার নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকসহ দু’জনকে পুলিশ আটক করে। পরদিন বৃহস্পতিবার আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পান। তবে শুক্রবার শিক্ষার্থীরা ইট ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরা করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
জানা যায়, উপজেলার কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পাশাপাশি অবস্থিত। একই মাঠের এক পাশে ৩০ বছর আগে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এ শহীদ মিনারে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিজয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
অভিযোগ রয়েছে, গত ১৫ জানুয়ারি কুশারীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে শৌচাগার (ওয়াশরুম) নির্মাণের উদ্যোগে নেন। এ ব্যাপারে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা দিলেও কোনো কর্ণপাত করা হয়নি। ফলে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করে। পরে বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করা হয়। ইউএনও নিশাত তামান্নার নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোত্তালিব আলম সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান ১১ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও তার সহযোগী সুকুমার মল্লিককে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, গত বুধবার আসামিদের গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়। পরদিন তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
এদিকে শুক্রবার মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইট ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার।
বৃহস্পতিবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন। এ সময় ইউএনও নিশাত তামান্না জানান, ইতোমধ্যে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নতুন করে শহীদ মিনার তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে