ওয়ালটনে ‘এলটিআই ফ্রি ম্যান আওয়ার্স’ উদযাপিত
Published: 24th, February 2025 GMT
গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এজন্য প্রতিষ্ঠানজুড়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলছে। সব ধরনের নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে নিজেদের দীর্ঘ সময় ধরে আঘাতমুক্ত রাখার পাশাপাশি কোনো কর্মঘণ্টা নষ্ট না করে উৎপাদন ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে ওয়ালটনের প্রোডাকশন প্ল্যান্টে। বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বের প্রচুর চাহিদা মেটানোর পরেও ওয়ালটনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট রেফ্রিজারেটর ফ্যাক্টরি-০৩ গত ১ বছরের বেশি (১৬ লাখের বেশি কর্মঘণ্টা) সময় ধরে Lost Time Injury (LTI) থেকে মুক্ত আছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সের এনভায়রনমেন্ট হেলথ অ্যান্ড সেফটি (ইএইচএস) বিভাগের পক্ষ থেকে ‘Lost Time Injury (LTI) Free Man Hours’ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, “ওয়ালটনের প্রধান শ্লোগান হচ্ছে ‘সবার আগে নিরাপত্তা’। তারপর অন্যান্য কাজ। এর মানে হচ্ছে, যেকোনো কাজের চেয়ে নিরাপত্তার মূল্য এখানে অনেক বেশি।”
এ সময় তিনি উপস্থিত সবাইকে নিরাপত্তা মেনে এত বড় অর্জনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ওয়ালটন হাই-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিজনেস কো-অর্ডিনেটর ইঞ্জিনিয়ার প্রতিক কুমার মোদাক বলেন, “দুর্ঘটনামুক্ত থাকা এক জন ব্যক্তির প্রাথমিক দায়িত্ব হলেও আমরা সবাই এর সাথে জড়িত। প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সঠিক কাজ করার ফল আজকে পেয়েছি আমরা। তাই, ওয়ালটনকে দুর্ঘটনামুক্ত রাখতে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর প্রোডাক্টশনের বিভাগীয় প্রধান মো.
এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার পাশাপাশি ইএইচএস বিভাগকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সবশেষে ইএইচএস বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, “পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে Lost Time Injury (LTI) Free Man Hours একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এই অর্জনে আমরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকতে পেরে গর্বিত অনুভব করছি। মূলত, নিরাপত্তার বিষয়ে সকলের সচেতনতা এই অর্জনের অন্যতম কারণ। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো সচেতন হলে এরকম অনুষ্ঠান আমরা নিয়মিত আয়োজন করতে পারব।”
অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট রেফ্রিজারেটর ফ্যাক্টরি-০৩ এর ইনচার্জ মো. নুর কাওসার, ইএইচএস বিভাগের ব্লক কো-অর্ডিনেটর মো. রায়হানসহ প্রডাকশন, প্রসেস ডেভেলপমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, প্রশাসন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সিনিয়র প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে সবাইকে উৎসাহ ও ধন্যবাদ জানান। পরবর্তী সময়ে ভালো কাজের জন্য নির্বাচিত কর্মীদের সেফটি হিরো পুরস্কার প্রদান, কেক কাটা এবং সংশ্লিষ্ট রেফ্রিজারেটর ফ্যাক্টরি-০৩ ইউনিটকে সনদ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে এ জমকালো আয়োজনের সমাপ্তি হয়।
ঢাকা/একরাম/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।