গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এজন্য প্রতিষ্ঠানজুড়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলছে। সব ধরনের নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে নিজেদের দীর্ঘ সময় ধরে আঘাতমুক্ত রাখার পাশাপাশি কোনো কর্মঘণ্টা নষ্ট না করে উৎপাদন ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে ওয়ালটনের প্রোডাকশন প্ল্যান্টে। বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বের প্রচুর চাহিদা মেটানোর পরেও ওয়ালটনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট রেফ্রিজারেটর ফ্যাক্টরি-০৩ গত ১ বছরের বেশি (১৬ লাখের বেশি কর্মঘণ্টা) সময় ধরে Lost Time Injury (LTI) থেকে মুক্ত আছে। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সের এনভায়রনমেন্ট হেলথ অ্যান্ড সেফটি (ইএইচএস) বিভাগের পক্ষ থেকে ‘Lost Time Injury (LTI) Free Man Hours’ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, “ওয়ালটনের প্রধান শ্লোগান হচ্ছে ‘সবার আগে নিরাপত্তা’। তারপর অন্যান্য কাজ। এর মানে হচ্ছে, যেকোনো কাজের চেয়ে নিরাপত্তার মূল্য এখানে অনেক বেশি।” 

এ সময় তিনি উপস্থিত সবাইকে নিরাপত্তা মেনে এত বড় অর্জনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। 

ওয়ালটন হাই-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিজনেস কো-অর্ডিনেটর ইঞ্জিনিয়ার প্রতিক কুমার মোদাক বলেন, “দুর্ঘটনামুক্ত থাকা এক জন ব্যক্তির প্রাথমিক দায়িত্ব হলেও আমরা সবাই এর সাথে জড়িত। প্রত্যেকের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সঠিক কাজ করার ফল আজকে পেয়েছি আমরা। তাই, ওয়ালটনকে দুর্ঘটনামুক্ত রাখতে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”  

ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর প্রোডাক্টশনের বিভাগীয় প্রধান মো.

নাসির উদ্দিন রনি বলেন, “সাড়া বছর আপনারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশ-বিদেশের চাহিদা মিটিয়ে মানবসেবামূলক কাজ করেছেন। তারপরও দুর্ঘটনামুক্ত থাকার এই রেকর্ড সত্যিই আমাদের অভিভূত করেছে।” 

এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার পাশাপাশি ইএইচএস বিভাগকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

সবশেষে ইএইচএস বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, “পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে Lost Time Injury (LTI) Free Man Hours একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এই অর্জনে আমরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকতে পেরে গর্বিত অনুভব করছি। মূলত, নিরাপত্তার বিষয়ে সকলের সচেতনতা এই অর্জনের অন্যতম কারণ। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো সচেতন হলে এরকম অনুষ্ঠান আমরা নিয়মিত আয়োজন করতে পারব।” 

অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট রেফ্রিজারেটর ফ্যাক্টরি-০৩ এর ইনচার্জ মো. নুর কাওসার, ইএইচএস বিভাগের ব্লক কো-অর্ডিনেটর মো. রায়হানসহ প্রডাকশন, প্রসেস ডেভেলপমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, প্রশাসন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সিনিয়র প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে সবাইকে উৎসাহ ও ধন্যবাদ জানান। পরবর্তী সময়ে ভালো কাজের জন্য নির্বাচিত কর্মীদের সেফটি হিরো পুরস্কার প্রদান, কেক কাটা এবং সংশ্লিষ্ট রেফ্রিজারেটর ফ্যাক্টরি-০৩ ইউনিটকে সনদ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে এ জমকালো আয়োজনের সমাপ্তি হয়।

ঢাকা/একরাম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে আবার ইরানের হামলা, নাগরিকদের নেওয়া হলো সুরক্ষিত এলাকায়

ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিব শহর লক্ষ্য করে ইরান নতুন করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের এক মুখপাত্রের বরাতে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ হামলা ভোর পর্যন্ত চলবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি ও আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজের প্রতিবেদনেও নতুন করে ইসরায়েলে ইরানের হামলা চালানোর কথা বলা হয়েছে। খবর-গার্ড়িয়ান

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলি শহর তেল আবিব ও হাইফা শহরে আঘাত করেছে। এতে চলতি সপ্তাহের জি-৭ বৈঠকে বিশ্ব নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে যে, এই দুই আঞ্চলিক শত্রুর মধ্যে সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বৃহত্তর যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ইরান থেকে ছোড়া নতুন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইরান থেকে ছোড়া নতুন ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আকাশে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে। 

নাগরিকদের সুরক্ষিত এলাকায় আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান: ইসরায়েলি বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের হামলার ব্যাপারে নাগরিকদের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সাধারণ জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার পর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছে, ‌দেশের সমস্ত অঞ্চলের সুরক্ষিত এলাকা ছেড়ে যাওয়া সম্ভব। নাগরিকরা এখন দেশের সমস্ত অঞ্চলের সুরক্ষিত এলাকা ছেড়ে যেতে পারে।

এর আগে রোববার সোমবার ভোরে ইসরায়েলে ইরানের হামলায় চারজন নিহত ও ৮৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গার্ডিয়ান। এছাড়া বেশ কিছু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে।   

ইসরায়েলের ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জরুরি পরিষেবা সোমবার জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের চারটি স্থানে হামলায় চারজন নিহত এবং ৮৭ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজন মহিলা এবং দুজন পুরুষ, যাদের সকলের বয়স আনুমানিক ৭০ বছর।

নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে: ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিব শহর লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ইসরায়েলে ইরানের হামলায় শুক্রবার থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে।

তেল আবিবের কাছে মধ্য ইসরায়েলি শহর পেতাহ টিকভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সেখানে একটি আবাসিক ভবনে আঘাত করেছে। কংক্রিটের দেয়াল পুড়ে গেছে। জানালা উড়ে গেছে। একাধিক অ্যাপার্টমেন্ট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দেশটির জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর হাইফায় হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে অনুসন্ধান চলছে। যেখানে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। বন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

নতি স্বীকারের কোনোও ইচ্ছা নেই: ইরান
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, দেশটি ইসরায়েলে কমপক্ষে ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে উত্তেজনা কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বানের কাছে নতি স্বীকার করার কোনোও ইচ্ছা তাদের নেই। কারণ শুক্রবার তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং সামরিক নেতৃত্বের ওপর ইসরায়েলের আকস্মিক আক্রমণের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তারা জোর দিয়েছে।

এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংক্ষেপে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বর্তমানে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু।’ এতে কিছুক্ষণের জন্য টেলিভিশনটির সম্প্রচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মিনিট পরে সেটি পুনরায় সম্প্রচারে আসে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের অধীনস্থ ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক (আইআরআইএনএন) জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের হামলার শিকার হয়েছে। গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল ‘সত্যের কণ্ঠস্বরকে থামিয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ।

ইসরায়েলের হামলার পর আগুনে পুড়তে থাকা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের এক সাংবাদিক। ভিডিওটিতে ওই সাংবাদিক বলেন, তিনি নিশ্চিত নন—এই হামলায় তার কতজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে ইসরায়েলি হামলায় সেখানকার বেশ কয়েকজন কর্মী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের পরিচয় কী, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানাননি কর্মকর্তারা।

টেলিভিশনটির একজন সাংবাদিক বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, হামলার সময় তারা ভবনটিতে কাজ করছিলেন। তখন সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। কিন্তু আকস্মিক হামলার পর কিছুক্ষণের জন্য সম্প্রচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মিনিট পর অবশ্য পুনরায় সম্প্রচার কাজ চালু করতে সক্ষম হন টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ।

একপর্যায়ে টেলিভিশনটির সম্প্রচার শাখার প্রধান পেমান জেবেলি রক্তমাখা একটি কাগজ নিয়ে পর্দায় হাজির হন। সেটি দেখিয়ে তিনি বলেন, তারা ‘শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন’।

গণমাধ্যম কার্যালয়ে হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল ‘সত্যের কণ্ঠস্বরকে থামিয়ে দেওয়ার’ চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছে ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান নিউজ নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের হামলার আগ মুহূর্তে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পর্দায় উপস্থাপিকাকে দেখা যাচ্ছিল। হামলার সময় উপস্থাপিকাকে দ্রুত সরে যেতে দেখা যায়। অন্যদিকে, গণমাধ্যম কার্যালয়টি ইরান সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।

এই হামলার কিছুক্ষণ আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। কাৎজের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ইরানের প্রচারণা ও উসকানির মেগাফোন ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলার কথা স্বীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। হামলার পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, তেহরানের স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যেতে বলার পরে ওই হামলাটি চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ইরানের স্বৈরশাসক যেখানেই থাকুন না কেন, তাকে আঘাত করা হবে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ