‘কোনো অন্যায় করিনি, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেইনি। অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সরল বিশ্বাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ বেস্ট হোল্ডিংস কোম্পানির কাছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংকের পাওনা ঋণকে শেয়ারে রূপান্তরে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে শুনানিতে আত্মপক্ষ সমর্থনে একথা বলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বহুল সমালোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ড.

এম খায়রুল হোসেন। সোমবার তাঁকে শুনানিতে ডাকে বিএসইসি।

২০১১ সালের শেয়ারবাজার ধসের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেনকে চেয়ারম্যান করে বিএসইসি কমিশন পুনর্গঠন করে। টানা ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের ক্রীড়নকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়ে একের পর এক মন্দ কোম্পানির আইপিও অনুমোদন করেছেন। ওই কোম্পানিগুলোর অনেকগুলোই এখন বন্ধ বা রুগ্‌ণ।

গতকাল বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ বেস্ট হোল্ডিংস ইস্যুতে শুধু ড. খায়রুল এবং শিবলী কমিশনের সব চেয়ারম্যান ও কমিশনারকে শুনানীতে ডাকে। অভিযোগ ছিল, তারা পৃথক সময়ে বেস্ট হোল্ডিংসের ঋণকে বন্ড ও শেয়ারে রূপান্তর এবং ২০২৩ সালে আইপিও অনুমোদনে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। শুনানি গ্রহণ করেন বিএসইসির কমিশনার মো. আলী আকবর। মানি লন্ডারিং মামলায় জেলে থাকায় অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত–উল ইসলাম হাজির হতে পারেননি। শিবলী কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক রুমানা ইসলাম লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিয়েছেন। তবে খায়রুল ও তাঁর সময়কার কমিশনার অধ্যাপক হেলাল নিজামীসহ উভয় কমিশনের বাকি কমিশনাররা হাজির হন। এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও খায়রুল হোসেন সাড়া দেননি। শুনানিতে অংশ নিয়ে সবাই লিখিত ব্যাখ্যা জমা দিয়েছেন। কমিশনের প্রশ্নের মুখে তারা সবাই দাবি করেন, কমিশনের চেয়ারম্যান বা কমিশনার পদে দায়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বাসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কোনো অন্যায় করেননি।
খোন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে বিগত দুই কমিশনের সময়ের ১২টি সুনির্দিষ্ট অনিয়ম উদ্ঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি করে। ওই কমিটি বেস্ট হোল্ডিংসসহ সাতটি বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। 

আইপিও প্রক্রিয়ায় ৩৫০ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার বিক্রি করে গত বছর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বেস্ট হোল্ডিংস। বিগত সরকারের সময়কার আর্থিক খাতের অনিয়মের ‘বরপুত্র’ চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের প্রভাবে কোম্পানিটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংক থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে প্রথমে বন্ড ইস্যু করে। বন্ডের কূপনসহ মূল টাকা ফেরত না দিয়ে ১০ টাকা দরের শেয়ার ৬৫ টাকা করে গছিয়ে দেয় ব্যাংকগুলোকে। এর পর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করে। সবটা জেনেবুঝে বন্ড এবং আইপিওর অনুমোদন দেয় খায়রুল ও শিবলী কমিশন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ব এসইস অন য য় আইপ ও

এছাড়াও পড়ুন:

দুই মাস ফ্রিজে রাখার পর মামুনের মাথায় খুলি পুনঃস্থাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথায় খুলি প্রায় দুই মাস ফ্রিজে সংরক্ষণ করার পর সফলভাবে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। 

শনিবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে খুলি পুনঃস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মামুন মিয়ার মাথায় সফলভাবে অপারেশন করা হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন।

গত ৩০ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন মামুন মিয়া।

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ টি এম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, চবিতে সংঘর্ষের দিন গুরুতর আহত অবস্থায় মামুন মিয়াকে পার্কভিউ হাসপাতালে আনা হয়েছিল। সেই থেকে তিনি এখানে চিকিৎসাধীন আছেন। অপারেশনের সময় তার মাখার খুলি খুলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস পর সফল অপারেশনের মাধ্যমে শনিবার মামুনের মাথার খুলি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।

গত ৩০ আগস্ট তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এতে মামুনসহ চবির অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী আহত হন। মাথায় মারাত্মক আঘাতের কারণে মামুনের মাথার খুলি খুলে রেখে দেওয়া হয়েছিল।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ