শান্তি প্রক্রিয়ায় অচলাবস্থা কাটল
Published: 27th, February 2025 GMT
ইসরায়েলের একঘেয়েমি আচরণের কারণে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, তা কেটে গেছে। ইসরায়েল ও হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মিসরের কায়রোতে দু’পক্ষের বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে। ফিলিস্তিনি ৬২০ বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে তেল আবিব। বিনিময়ে চার জিম্মিকে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই মুক্তি দেবে হামাস।
এদিকে আগামী শনিবার শেষ হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ। দ্বিতীয় পর্যায় কার্যকরের জন্য হামাসকে চারটি শর্ত দিয়েছে ইসরায়েল। শর্তগুলো হলো– সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে, হামাসকে গাজা থেকে বিদায় নিতে হবে, গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণ অস্ত্রমুক্ত করতে হবে এবং গাজার নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে দিতে হবে।
আলজাজিরা বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি বন্দি মারা গেছেন। কারাগারে আটকে রেখে ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে। ইসরায়েলের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ আবু তাবিলা বলেন, তাঁর শরীরে এসিড মারা হতো। চোখে শক্ত বস্তু দিয়ে আঘাত করা হতো। ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনে তাঁর সারা শরীর ঝলসে যায়। নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে পারেননি গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা। গাজার চিকিৎসক ডা.
রয়টার্স জানায়, গাজায় ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলি সাবেক নারী জিম্মি নোয়া আরগামানি। মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর দুর্দশার কথা বর্ণনা করেন এবং যুদ্ধ বন্ধের আবেদন জানান। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৩৪৮ ফিলিস্তিনি ও ১ লাখ ১১ হাজার ৭৬১ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত ধরা হচ্ছে।
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও দামেস্কের বাইরের অংশে বেশ কয়েকটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে গতকাল বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলায় অন্তত দু’জন নিহত হয়েছেন। ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধে জর্জরিত দেশটির নতুন সরকার এখন সেনাবাহিনী গঠন ও অর্থনীতি শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।
ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।