প্রায় এক যুগ পর নওগাঁ সদর উপজেলা ও ১৪ বছর পর পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল শুরু হয়েছে। দলটির এই দুই শাখায় কাউন্সিলরদের ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সদর উপজেলা বিএনপির ভোট গ্রহণ চলছে শহরের পিটিআই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর শহরের কেডি (কৃষ্ণধন) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে পৌর বিএনপির ভোট গ্রহণ।

দীর্ঘদিন পর কাউন্সিলকে ঘিরে দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। এর আগে কয়েক দিন ধরে দলীয় পদপ্রত্যাশীরা শহর ও গ্রামে মাইকিং করে প্রচার-প্রচারণা করেছেন।

নির্বাচন পরিচালনা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ নির্বাচন চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত। প্রত্যেক প্রার্থীর বিপরীতে প্রতীক নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। ভোট গণনা শেষে বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১২ সালে। তখন নওগাঁ জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিককে সভাপতি ও আ স ম আল কাফী তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। দুই বছর পর কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি হওয়ার কথা থাকলেও এক যুগেও তা হয়নি। তবে এর মধ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৭ ও ২০২২ সালে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

এবার সদর উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন দেওয়ান মোস্তাক আহমেদ ও সারওয়ার কামাল চঞ্চল। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থী হলেন আবদুস সালাম, নাদিম কুদ্দুস, সরদার সাইফুল ইসলাম এবং শ ম আ আল কাফী তুহিন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থী হলেন খালেদ হাসান, রফিকুল ইসলাম, আরিফুল হক রানা ও ওবাইদুর রহমান। কাউন্সিলে ৮৫২ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।

সভাপতি প্রার্থী দেওয়ান মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। আমি আশাবাদী, কাউন্সিলররা ভোটের মাধ্যমে আমাকে বিজয়ী করবেন।’ আরেক সভাপতি প্রার্থী সারওয়ার কামাল বলেন, ‘বিএনপি যে একটি গণতান্ত্রিক দল, এই নির্বাচনই তার প্রমাণ। নেতা-কর্মীরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে তাঁদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

অপর দিকে নওগাঁ পৌর বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১০ সালে। ওই সময় নাছির উদ্দিনকে সভাপতি ও নুরুনবী সাজা সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। পৌর বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন নুরুননবী সাজা ও শেখ মিজানুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তিন প্রার্থী হলেন শাহ্ আজিজুর রহমান চৌধুরী, আবদুল মতিন তালুকদার ও দিদারুল হক রতন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পাঁচ প্রার্থী হলেন আফা উদ দৌলা সবুজ, মতিউর রহমান, মহসিন আলী, এস এম শহীদুল ইসলাম ও শাহীদুজ্জামান। এতে ভোট দেবেন ৬৩৯ জন কাউন্সিলর।

কাউন্সিল সম্পর্কে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এত দিন দলে যে দুর্বলতা ছিল, তা এই কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে কাটিয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে গঠিত কমিটি ভবিষ্যতে মজবুত ও গতিশীলভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ব এনপ র সদর উপজ ল ভ ট গ রহণ র রহম ন গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা

রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।

এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”

সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”

এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

বিবৃতিতে  বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। 

ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।

ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।

ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ