জামালপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন স্থগিত
Published: 28th, February 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জে বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের পর চরপাকেরদহ ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই ইউনিয়নের তেঘরিয়া সাদেহ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হন। এ সময় সম্মেলনের মঞ্চ ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক মনজুরুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনার কারণে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে যাঁরা দোষী হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ তেঘরিয়া কলেজ মাঠে চরপাকেরদহ ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ মো.
জানতে চাইলে বিপ্লব তরফদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহ মোস্তাক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা। বাবার সুবাদে এলাকায় থেকে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। সম্মেলনের মঞ্চ দেখতে তাঁর ১০ থেকে ১৫ জন নেতা-কর্মী মাঠে গিয়েছিলেন। তখন মোস্তাকের নেতৃত্বে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। সম্মেলনটি পণ্ড করতে মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর এবং আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের জানানো হয়েছে। পরে আজকের সম্মেলনটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে শাহ মো. মজনু প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহ মোস্তাক আমার নিজের সন্তান না। আমার ছোট ভাইয়ের সন্তান। তবে ছোট থেকেই তাঁকে লালন–পালন, লেখাপড়াসহ সবকিছু আমি করি। আমার বাসায় থাকে। সে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু হলে থাকত। এ জন্য ছাত্রলীগ করেছে। কিছুদিন আগে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগও করেছে। আমি কোথাও গেলে সে আমাকে নিয়ে যায়। ফলে বিএনপির অনেকেই নানা রকম সমালোচনা করেন। তাই আমি এখন তাকে কোথাও নিয়ে যাই না। আর সে তো এলাকায় এসে ছাত্রদল বা বিএনপির কোনো পদপদবিও চায়নি। মূল সমস্যাটা হলো, এই সম্মেলনে ওই প্রার্থী (বিপ্লব) বেরিয়ে আসতে পারবে না। এটা বুঝেই তাঁরা সম্মেলনটি পণ্ড করতে নানা সমস্যা করছিলেন। গতকাল রাতে হঠাৎ তাঁর (বিপ্লব) লোকজন গিয়ে মঞ্চ ও চেয়ারে আগুন লাগিয়ে দেন। বিষয়টি টের পেয়ে তখন আমার লোকজন লাঠি নিয়ে তাঁদের ধাওয়া দেন। এতে তাঁরা পালিয়ে যান। আমার কোনো লোকজন এ ঘটনা ঘটায়নি। সম্মেলন পণ্ড করেছে তাঁর (বিপ্লব) লোকজন।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?