ছিনতাইকারীর কবলে অভিনেতা, দিলেন ভয়ঙ্কর ঘটনার বিবরণ
Published: 2nd, March 2025 GMT
শুটিং শেষে ফেরার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়লেন অভিনেতা হারুন রশিদ (বান্টি)। শনিবার (১ মার্চ) রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানিয়েছেন অভিনেতা নিজেই।
সামাজিকমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে হারুন রশিদ লেখেন, কাঞ্চন ৩০০ ফিট থেকে কুড়িল বিশ্বরোড রাত বিরাতে সাবধানে। আজকে আমি কট খেয়েছি কাল আপনি খেতে পারেন। ওই রোডে রাতে সিএনজি স্টার্ট বন্ধ হলে ধরে নেবেন আপনি কট। যেমনটা আমার হয়েছে। শরীরের ওপর দিয়া যায় নাই টাকার ওপর দিয়ে গেছে।
টাকা-পয়সা নিলেও ছিনতাইকারীরা মোবাইল নেননি এই অভিনেতার। তার ভাষ্য, নাটক করি বলে মোবাইলটা দিয়া গেছে। ধন্যবাদ ছিনতাইকারী ভাইয়েরা।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে হারুন রশিদ জানান, ৩০০ ফিট থেকে কমলাপুর যাওয়ার জন্য কাঞ্চন ব্রিজ থেকে একটা সিএনজিতে উঠেছিলেন তিনি। পাঁচ মিনিট যাওয়ার পরই অন্ধকারাচ্ছন্ন এক জায়গায় গাড়ির স্টার্টজনিত সমস্যার কথা বলে দাঁড়িয়ে যায় ড্রাইভার। এরপরই কয়েক ছিনতাইকারী এসে ঘিরে ধরে অভিনেতাকে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ৯ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা।
অভিনেতা বলেন, ওদের হাতে চাপাতি ছিল। সে কারণে ওরা বলার সঙ্গে সঙ্গে মানিব্যাগ, মোবাইল দিয়ে দিই। সঙ্গে ব্যাগ ছিল। খুব স্মার্ট ছেলেপেলে। বলছিল, ব্যাগে জামা কাপড় ছাড়া কিছু নাই। অন্য এক ছেলে বলছিল উনি তো অভিনয় করেন। ওনার মোবাইলটা নিস না। নিলে আমরা ঝামেলায় পড়ব। টাকাগুলো নিয়ে ওনাকে বিদায় কর। আমাকে শুনিয়েই কথাগুলো বলছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কাজটি হয়ে গেল। এরপর ওরা বাম দিকের রোড দিয়ে ঝড়ের বেগে চলে গেল।
হারুন রশিদ বলেন, এরপর আমি নির্বাক হয়ে ফুটপাতে বসে রইলাম। অনেক গাড়ি যাচ্ছিল। কিন্তু হাত নাড়া সত্ত্বেও থামছিল না। পরে একটি বাইক থামে। ঘটনা খুলে বললে তিনি আমাকে পৌঁছে দেন।
প্রসঙ্গত, দেশের নাট্যাঙ্গনে এক নামে পরিচিত হারুন রশিদ। সবাই তাকে বান্টি ভাই বলেই অভিহিত করেন। তবে তার পুরো নাম হারুন রশীদ বান্টি। ২০১৪ সালে আশিকুর রহমানের ‘মুসাফির’ সিনেমায় অভিনয় করার পর থেকে তিনি বান্টি নামেই পরিচিত হতে লাগলেন। এই সিনেমাতে অভিনয়ই তার জীবনের প্রথম অভিনয়। এরপর আরও বেশ কয়েকটি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন তিনি।
বর্তমানে নাটকে নিয়মিত অভিনয় করেছেন হারুর রশিদ। বেশকিছু বিজ্ঞাপনেও মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। অভিনয়ে দিন দিন ব্যস্ত হয়ে উঠার কারণে ২০২০ সালে চাকুরি ছেড়ে পুরোদমে অভিনয়েই ব্যস্ত হয়ে উঠেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ নত ই
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত