‘তুমি রোজ বিকেলে আমার বাগানে ফুল নিতে আসতে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘তোমার চন্দনা মরে গেছে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘ডাকে পাখি খোল আঁখি’, ‘একি খেলা চলছে হরদম’, ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপ্নেরও রাত’সহ অসংখ্য শ্রোতানন্দিত গানের সুরস্রষ্টা শেখ সাদী খান। স্বাধীনতা পরবর্তী যে ক’জন সুরকার আধুনিক বাংলা গানের সুরের জগতে নতুন ধারা তৈরি করেছেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। জীবন্ত এ কিংবদন্তি আজ ৭৫ বছরে পা রাখছেন। জন্মদিনে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো আয়োজন নেই এবার। একেবারেই ঘরোয়াভাবে দিনটি উদযাপন করবেন তিনি। 

জন্মদিন প্রসঙ্গে শেখ সাদী খান বলেন, ‘৭৫-এ পা দিয়েছি। জীবন থেকে কখন যে এতগুলো দিন চলে গেলো টেরই পাইনি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জীবনের এই বিশেষ দিনটি কাটাবো। আগে বাইরে জন্মদিন উদযাপন হতো। বিভিন্ন চ্যানেলে থাকতো আয়োজন। এগুলো না করার জন্য নিষেধ করেছি। মানুষ যেন দোয়া করে এটাই চাই। যতদিন বাঁচি যেন সুস্থ থেকে ভালো কিছু কাজ করে যেতে পারি-এটাই প্রত্যাশা। এখনো অনেক স্বপ্নপূরণ বাকি, কিছু ভালো ভালো কাজ করার বাকি আছে।’
জন্মদিনের উপলব্দি নিয়ে তিনি বলেন, ‘জন্মদিন মানে জীবন থেকে একটি বছর খসে যাওয়া। আমরা সামনের দিকে যাচ্ছি,মানে জীবন থেকে একটি বছর কমে যাচ্ছে। এটি মাঝে মাঝে মাথায় জেঁকে বসে। জীবন তো চলে যাচ্ছে। ক্রমেই কাছে আসছে নির্দিষ্ট গন্তেব্যে যাওয়ার জন্য। যতদিন বেঁচে থাকি, ততটুকু সময় ভালো কিছু করতে চাই। সেটিই প্রাপ্তি। অন্তরের শান্তির । নিজের অভিজ্ঞতাকে আরও কাজে লাগাতে চাই।’  

দেশ স্বাধীনের আগে ‘যা যারে যারে পাখি’ গানে শেখ সাদী খান প্রথম সুর করেন। এর পর ১৯৬৮ সালে মোস্তফা কামাল সৈয়দ প্রযোজিত বিটিভির ‘সুর সাগর’ অনুষ্ঠানে শেখ সাদী খানের সুরে গানে কন্ঠ দেন প্রয়াত আব্দুল জব্বার ও আরতি ধর। ১৯৮০ সালে প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় ‘এখনই সময়’ সিনেমার সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। এ সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে ‘জীবন মানে যন্ত্রণা’, আবিদা সুলতানার কন্ঠে ‘একটা দোলনা যদি’ গান দুটির শেখ সাদী খানকে অন্যরকম জনপ্রিয়তা পাইয়ে দেয়। এখন পর্যন্ত ১০৫টিরও বেশি সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। সুর করেছেন ৮০০০ হাজারেরও বেশি গান। ‘ঘানি’ ও ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায়না’সিনেমার সংগীত পরিচালনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুশফিকের প্রেমকাহিনির মঞ্চে ম্যাথুসের বিদায়ী সুর

* শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৬ টেস্টে বাংলাদেশের একটাই জয়। সেটি আবার শ্রীলঙ্কাতে। সেই জয় বাংলাদেশের শততম টেস্টে বলে আপনার তা খুব ভালোমতোই মনে থাকার কথা।

* টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ৬০০ ছাড়ানো একমাত্র স্কোরটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেটিও শ্রীলঙ্কাতে।

* টেস্টে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। হ্যাঁ, হ্যাঁ, সেটিও শ্রীলঙ্কাতেই।

শেষ দুটি আবার একে অন্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। দুটি একই টেস্টে। ২০১৩ সালে যে টেস্টে বাংলাদেশের ৬৩৮, সেটিতেই মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি। টানা ১২ টেস্টে হারার পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ড্র-ও।

এই পুরোনো প্যাচাল খুব বেশি অপ্রাসঙ্গিক লাগবে না, যখন জানবেন ওই টেস্টটা হয়েছিল গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। পশ্চাৎপটে অতিকায় গল ফোর্টের পাথুরে কাঠামো আর দুই পাশে সাগর মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের একটি। ২০০৪ সালে সুনামিতে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পর পুনর্জন্ম নেওয়া গলের সেই মাঠেই আজ শুরু বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্ট। শুরু আসলে তিন ধরনের ক্রিকেটেই একে অন্যের নাড়ি-নক্ষত্র বুঝে নেওয়ার লড়াই। যাতে টেস্ট আছে, ওয়ানডে আছে, আছে টি-টোয়েন্টিও। দুই টেস্টের পর সাদা বলের সিরিজে তিনটি করে ম্যাচ।

আরও পড়ুনআমিনুল ইসলাম বুলবুলকে চিনতে হলে এই লেখাটা পড়তে হবে০২ জুন ২০২৫

দুই দল পরস্পরের খুব চেনা। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ২৬টি টেস্ট খেলেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ঘন ঘন দেখা হলে হৃদ্যতা যেমন হয়, তেমনি রেষারেষিও। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। গত কয়েক বছরে এই দুই দল মুখোমুখি হলেই মাঠে বা মাঠের বাইরে উত্তেজনার ফুলকি ছুটেছে। ‘টাইমড আউট’ হয়তো সেটির এক নম্বরে, এর বাইরেও নানা কিছু মিলে লঙ্কা-বাংলা এখন গনগনে এক দ্বৈরথের নাম।

গত চার বছর দুই দলের মধ্যে চতুর্থ টেস্ট সিরিজ। দুই দলের জন্যই রণকৌশল ঠিক করা তাই খুব সহজ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ দলের জন্য হয়তো তা থাকছে না শ্রীলঙ্কা দলে নতুনের সমারোহে। ১৮ জনের দলের এক–তৃতীয়াংশই এখনো টেস্ট খেলার অপেক্ষায়। বাংলাদেশ দলেও কিছু পরিবর্তন আছে, তবে তা ধর্তব্যের মধ্যে নয়।

টেস্টের প্রস্তুতিতে গলে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল

সম্পর্কিত নিবন্ধ