রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অ্যাডহকে নিয়োগ চারজনের অন্যতম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাশেদুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেছেন বাম ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মী।

তবে রাবির ১৭ জন সমন্বয়কের তালিকায় তার নাম পাওয়া যায়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তাকে সমন্বয়কদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ দাবি করেন।

আরো পড়ুন:

বসন্তের ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে রাবি

এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন

জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় মাসের জন্য চারজনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে প্রশাসন। এর মধ্যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারে দুইজন, মেডিকেল সেন্টারে ও জনসংযোগ দপ্তরে একজন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদের ব্যাপারে কোন কথা না বললেও জনসংযোগ দপ্তরে নিয়োগ পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পৃষ্ঠপোষক রাশেদুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেন বাম নেতা-কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পাসের ছয়টি ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আল শাহরিয়ার শুভ, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সিকদার ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি শামিন ত্রিপুরা।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, “আমরা কখনোই ভাবিনি এমন একটা বিষয় নিয়ে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে কথা বলতে হবে। ৫ আগস্টের পরও আমাদের স্বপ্ন ছিল সমতা ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলব। কিন্তু আমাদের স্বপ্ন আজ ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে একত্রিত হয়েছি।”

তিনি বলেন, “আমরা গতকাল (সোমবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞস্তিতে জানতে পেরেছি, রাশেদুল ইসলামকে জনসংযোগ দপ্তরে অনুসন্ধান কাম তথ্য অফিসার পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি রাবির সমন্বয়কদের পৃষ্ঠপোষক। তিনি স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদকও। সবার জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই মেহেদী সজীব, ফাহিম রেজা-সহ স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন আরো কয়েকজন সদস্য রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক প্যানেলে আছেন।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা ধারণা করছি, আওয়ামী লীগের মতো মেহেদী সজীব, ফাহিম রেজাসহ স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের কতিপয় সমন্বয়ক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এ নিয়োগের পেছনে জড়িত। ইতোপূর্বে আমরা জেনেছি, রাবির ১৭ জনের সমন্বয়ক প্যানেলের ১২ জন সম্মত হয়ে রাবির উপ-উপাচার্য নিয়োগে কলকাঠি নেড়েছেন। আমাদের আশঙ্কা, সমন্বয়ক পরিচয়ে রাবির উপ-উপাচার্য নিয়োগের মধ্য দিয়ে প্রশাসনকে জিম্মি করে রাশেদ রাজনের নেতৃত্বাধীন সমন্বয়কদের এ অংশটি নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে শুধু রাশেদ রাজনের নিয়োগ বাতিল চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বাম নেতারা বলেন, রাশেদ রাজনের বিষয়টা বেশি আলোচিত হয়েছে। বাকিদের বিষয়টা সকালে জেনেছি। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অ্যাডহকে নিয়োগ দেওয়া সমীচীন নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এ নিয়োগের বৈধতা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলবে, তারা হয় লেখাপড়া জানে না অথবা না জেনে কথাবার্তা বলছে। অর্ডিন্যান্সের ভিতরে পরিষ্কার বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রয়োজন মনে করলে তিনি ছয় মাসের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে পারেন।”

তিনি বলেন, “এখানে কোন কোটার প্রশ্ন নেই, কোন সমন্বয়কের প্রশ্ন নেই। তাকে যোগ্য মনে হয়েছে বলে আমরা একটা দায়িত্ব দিয়েছি। সেটা সে পালন করতে পারলে থাকবে, আর পালন না করতে পারলে থাকবে না। তবে যেসব কথা বলা হচ্ছে, তা ডাহা মিথ্যা।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমন বয়কদ র র সমন বয়ক উপ চ র য অ য ডহক

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে