১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
Published: 1st, November 2025 GMT
তেলেগু সিনেমার মহাতারকা সাবিত্রী, যাঁকে একসময় মাধুবালা ও মীনা কুমারীর সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনা করা হতো। তাঁর জীবনের গল্প দর্শকদের মনে আজও গভীর ছাপ রেখেছে। ১৯৮০-এর দশকে তিনি ছিলেন দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ১৯৬০-এর দশকে তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি রুপি। কিন্তু ব্যক্তিগত নানা ঝামেলায় পাদপ্রদীপের আলো থেকে হারিয়ে যান অভিনেত্রী। তিনি আর কেউ নন, সাবিত্রী।
স্বপ্নের শুরু ও প্রেমের পথচলা
সাবিত্রী ছোটবেলা থেকেই নাচ ও অভিনয়ে দক্ষতা দেখিয়েছেন। কিশোর বয়সে সিনেমার দুনিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা শুরু করেন। মাদ্রাজের জেমিনি স্টুডিওসে কাজের সুযোগ খোঁজার সময় তিনি এক যুবক রামাসমি গণেশনের (পরবর্তী সময় ‘জেমিনি’ নামে পরিচিত) সঙ্গে দেখা করেন। গণেশন তখন স্টুডিওতে কাস্টিং সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি সাবিত্রীর ছবি তুলে লিখেছিলেন, ‘সুযোগ দিলে ভালো হবে।’
পরবর্তী সময় সাবিত্রী চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ১৯৫২ সালে এন টি রামা রাওয়ের সঙ্গে ‘পেল্লি চেসি ছুডু’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা পান। গণেশনও অভিনয় শুরু করেন। দুজনের বন্ধুত্ব ক্রমে প্রেমে পরিণত হয়। সাবিত্রী ও গণেশন বিয়ে করেন। যদিও গণেশন এরই মধ্যে বিবাহিত ছিলেন।
গোপন বিয়ে ও স্বামীর প্রতারণা
সাবিত্রী ও গণেশন তাঁদের বিয়ের খবর প্রথমে গোপন রাখেন। এটি প্রকাশ পায়, যখন সাবিত্রী একটি হেয়ার অয়েলের বিজ্ঞাপনে স্বাক্ষর দেন ‘সাবিত্রী গণেশ’ নামে। তখনই গণেশনের একাধিক সম্পর্ক ও প্রতারণা খবরের শিরোনামে আসে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছেন, ৬৯ বছর বয়সে করেছেন পিএইচডি
সময়টা ১৯৯৯ সাল। মরিশাস থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাড়ি জমান নিদ্যানন্দ রায়া। উদ্দেশ্য ছিল স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করা। বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, জীবনে যত দিন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তত দিন পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন তিনি।
এরপর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বাবাকে দেওয়া সেই কথা রেখেছেন নিদ্যানন্দ। এখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। এ বয়সে এসে মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে সামাজিক নীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নামের শুরুতে ‘ড.’ শব্দটি যুক্ত করেছেন।
এ অর্জন কেমন লাগছে? প্রশ্নের জবাবে নিদ্যানন্দের চটজলদি জবাব, ‘তেমন কিছুই না। এটা জীবনের একটা অর্জন মাত্র।’
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিদ্যানন্দ বলেন, আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ, ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।ড. নিদ্যানন্দ এখন লন্ডনের এনফিল্ডে বসবাস করেন। পড়াশোনার জন্যই দেশ ছেড়েছিলেন। বলছিলেন, নিজ দেশে পড়াশোনার সুযোগ সীমিত ছিল। তাই দেশ ছেড়ে এসেছিলেন।
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ ও ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।’
যুক্তরাজ্যকে ‘সুযোগের ভূখণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে আপনি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।’
স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর নিদ্যানন্দ সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার প্রস্তাব পান। কিন্তু সেখানে কাজের সুযোগ না থাকায় সেটা করতে পারেননি।
মাঝের সময়টায় যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে নিদ্যানন্দকে। দীর্ঘ সময় পরিবারের খরচ চালাতে স্কুলশিক্ষক স্ত্রী ল্যাকসোমিকে সহায়তা করতে পারেননি তিনি। বরং স্ত্রীই তখন পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। নিদ্যানন্দ বলেন, ‘তখন আমাকে চাকরি খুঁজে বের করতে হয়েছিল। আমাকে স্থায়ী হতে হয়েছিল। আমাকে সবকিছু করতে হয়েছিল।’
‘এখানে আসার পর আমি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। পরে আমাকে একজন পরিচর্যাকারী হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে,’ বলেন নিদ্যানন্দ।
নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই শিক্ষক বলেন, আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন নিদ্যানন্দ। এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।’
জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়ে বলতে গিয়ে কয়েক দশক আগে বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করেন নিদ্যানন্দ। তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছি। বাবা, আমি তোমাকে গর্বিত করেছি।’