সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন।

শনিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে প্রায় সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

সারাদেশে ধর্ষণ এবং মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় শনিবার রাত ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় প্রথম ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হল এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রী হলের সামনে যান। পরে ওই দুই হলের শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন।

এসময় তাদের ধর্ষণবিরোধী এবং ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে 'সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে', 'ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস', 'আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই', 'তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া', 'তোমার বোন আমার বোন, আছিয়া আছিয়া' স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এদিকে রাত সোয়া ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে গোল চত্বর হয়ে মুক্তমঞ্চের দিকে যান। এ সময় প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিলে অংশ নেন। মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ গঠনের ঘোষণা দেন।

ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার লুবনা বলেন, 'মূলত, ইন্টেরিম সরকার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিনের পর দিন নারীর জানমালের কোনো নিরাপত্তা দিতে পারছে না। পূর্বে নারীর প্রতি সব সহিংসতা রূপ নিয়েছে আজকের আছিয়ার ধর্ষণের ঘটনায়। কিন্তু এই ঘটনা তো নতুন না। কয়েকদিন আগে আমরা দেখেছি এক ধর্ষক মুক্তি পেয়েছে। নারীদের প্রতি এই সমাজ কেবল সহিংসতাতেই থামছে না; আমরা দেখছি এই রাষ্ট্র নারী নিপীড়কদের পালে হাওয়া দিচ্ছে। আছিয়ার জন্য আমরা বিচার চাই। আমরা বিচার চাই আনোয়ারা রোডের পাশে পড়ে থাকা ধর্ষিত অজ্ঞাত ওই নারীর জন্য। বিচার চাই সেই সকল নারীর জন্য- যারা বিচারহীনতায় ভুগছেন।

এদিকে সম্প্রতি ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবং দ্রুত ধর্ষকদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে সিলেটের সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিক সমাজ। রোববার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩
  • টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২