কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় আপন মামার বিরুদ্ধে ভাগনিকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ও ১৭ ফেব্রুয়ারি তাকে ধর্ষণ করে তার মামা। বিষয়টি জানার পর ৫ মার্চ ভুক্তভোগীর এক আত্মীয় মেঘনা থানায় মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক। মেঘনা থানার ওসি আব্দুল জলিল জানান, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় মসজিদের শৌচাগারে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে মো.

নুরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৪ মার্চের এ ঘটনা ৬ মার্চ জানাজানি হয়। সোমবার নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কবিরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা না করায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দ্বীন ইসলাম তোফাজ্জল নামে এক শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে বাড়ির বাইরে থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে ভুক্তভোগীর বাবার করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। 

বারিধারায় শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ: রাজধানীর বারিধারায় ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সজল হোসেন পলাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গুলশান থানার এসআই নাঈম উদ্দিন সুজন বলেন, ভুক্তভোগীর মা জানিয়েছেন, রোববার সকালে সজল শিশুটিকে বাসায় একা পেয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির মা কাজের জন্য বাইরে ছিলেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে গুলশান থানায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন শিশুটির মা। সজল তাদের পূর্বপরিচিত।

ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার: চট্টগ্রামে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে রোববার রাতে তার বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাবার পাশবিকতার দৃশ্য মায়ের পরামর্শে মোবাইল ফোনে ধারণ করে শিশুটি। কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম এসব তথ্য জানিয়েছেন। 

ঝালকাঠিতে কলেজছাত্র গ্রেপ্তার: ঝালকাঠির রাজাপুরে সহপাঠীকে ধর্ষণ ও গর্ভপাত করানোর অভিযোগে কাজী ফাহাদ নামে এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে রাজাপুর থানায় মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার ফাহাদকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

এদিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো পান্নু মোল্লা ও তার ভাবী শারমিন আক্তার। ঘটনার পর কাউকে না বলার জন্য শিশুটিকে শাসিয়ে দেয় শারমিন। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে খাবার দেওয়ার কথা বলে ডেকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নুরুল ইসলাম নামে এক চা দোকানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ধর্ষণের বিচার না পেয়ে উল্টো অপবাদ পাওয়া জান্নাত বেগম (১৭) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি রাকিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভোরে কুমিল্লার লাকসাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে একই মামলার আসামি হেলালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রামে আইনজীবী পল্টন দাশের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে এক নারী আইনজীবীর করা ধর্ষণ মামলার বিচার শুরু হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোস্তাক আহমেদের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদী প্রথমে সাক্ষ্য দেন। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ১৩ মে নির্ধারণ করেছেন আদালত। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সমকাল প্রতিবেদক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যুরো, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা)

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ছ উপজ ল য় ন র পর

এছাড়াও পড়ুন:

এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়

নেতা–কর্মীদের সতর্ক করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না থাকি, আমরা যদি সতর্ক না থাকি তাহলে এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়।’

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে আইনজীবীদের ভূমিকা: আলোচনা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব।

সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খুব সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কিন্তু খুব একটা সূক্ষ্ম তারের ওপর দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু চারদিকে আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন, চারদিকে একটু চোখ–কান খোলা রাখেন। দেখবেন কতগুলো ঘটনা ঘটছে, যে ঘটনাগুলোর আলামত ভালো না। এদিকে একটু লক্ষ রাখতে হবে।’

দেশের মানুষ সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতির নির্বাচন কী, সেটি বোঝে না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই সংস্কার হোক। সাধারণ মানুষ কিন্তু চায় যে একটা নির্বাচন হোক, সে নির্বাচন থেকে নতুন সরকার আসুক। যে সরকার তারা নির্বাচিত করতে পারবে, যে প্রতিনিধি তারা নির্বাচন করবে। তাদের কথা বলার লোক তারা পার্লামেন্টে (সংসদ) নিতে চায়। এটা খুব সহজ হিসাব।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই যে বিষয়গুলো তৈরি করা হচ্ছে কেন? এই বিতর্কগুলো তৈরি করা হচ্ছে কেন? এর পেছনে আপনি যদি মনে করেন এমনি এমনি করা হচ্ছে, তা নয়। এর পেছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। সেই উদ্দেশ্যটা সেই এক–এগারোতে ফিরে যাবেন, সেই উদ্দেশ্যটা, সেই একেবারে ফিরে চলে যাবেন এরশাদ সাহেবের ক্ষমতা দখল করা পর্যন্ত। এ দেশে গণতন্ত্রকে চলতে দিতে চায় না। একটা মহল আছে যারা বারবার গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরে। এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানও এই কাজটা করেছেন একদলীয় শাসনব্যবস্থা (বাকশাল) প্রবর্তন করে।’

বিএনপি লিবারেল ডেমোক্রেসি (উদার গণতন্ত্র) চায় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের দেশের জনগণ তার ভোটের অধিকার ফিরে পাক। সে ভোট দিক। ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি সে নির্বাচিত করুক। পার্লামেন্ট (সংসদ) তৈরি হোক, সরকার তৈরি হোক। তারা চালাবে পাঁচ বছর। সেই পাঁচ বছরে যদি তারা ব্যর্থ হয়, না পারে, আবার নির্বাচন হবে। নির্বাচনে জনতা তাদের বাদ দিয়ে দেবে, অন্য দলকে দেবে। তাই তো? এই জায়গাটায় যেতে এত তর্ক–বিতর্ক কেন?

নির্বাচনের জন্য আর দেরি করা অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের জন্য সঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির শুরুতে যে ডেডলাইন (সময়সীমা), এর পরে হলে আপনি যে সম্মান নিয়ে এসেছেন, সমগ্র বিশ্বে আপনার যে সম্মান, সেই সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।’

সভায় প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা গত এক বছরে বাংলাদেশের জন–আকাঙ্ক্ষার যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন এবং পুরা জিনিসটাই আপনি সংস্কারের নামে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে এত বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন; শেষ পর্যন্ত আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটা আমার ব্যক্তিগত অপিনিয়ন (মতামত), সংস্কারের নামে অপসংস্কার কুসংস্কার তৈরি করে নিয়ে যাবেন। একটু থামেন, আপনার তো এত ম্যান্ডেট নাই। সবকিছু নিয়েই আপনি বসে পড়েছেন। জুলাই সনদ হবে, জুলাই ঘোষণা হবে, সবই ঠিক। আর কত সময় নেবেন?

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে কিন্তু খুব বেশি সময় নাই। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো ব্যত্যয় যেন না ঘটে। আইনজীবীসহ সারা দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে আবার রাজপথের আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য আমাদেরকে বাধ্য করবেন না।’

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ঐকমত্য দেখি না, নির্বাচনের রোডম্যাপ দেখি না। গণতন্ত্রের পথে হাঁটুন, আইনজীবীরা কালো কোট পরে মাঠে নামলে কেউ থাকতে পারে না। নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে বিদায়ের চিন্তা করুন।’ সরকারে থাকা দুই তরুণ উপদেষ্টাকে যেন তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, সেই আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার প্রতি জানান তিনি।

সভার শুরুতেই একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মো. কামাল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট
  • এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়
  • সুরাইয়া মতিনের মৃত্যুতে ফতুল্লা প্রেসক্লাবের শোক
  • ‎আবু সাঈদ হত্যা: ৬ আগস্ট অভিযোগ গঠনের আদেশ 
  • আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ৬ আগস্ট
  • শিক্ষকের মুক্তি চেয়ে শিক্ষার্থীদের আদালত চত্বরে অবস্থান, সড়ক অব
  • কিশোরগঞ্জে আইনজীবীর বাড়িতে ডাকাতি, ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট
  • আবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন
  • দুদকের মামলায় রাজশাহীর সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার কারাগারে
  • বরগুনায় বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে নাকচ