এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে চায় সরকার
Published: 11th, March 2025 GMT
স্বল্পোন্নত (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার দিন ঠিক আছে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর। বিষয়টি আরও পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে বাংলাদেশ সরকার চাইলেই তা পিছিয়ে যাবে না। সরকার তাই জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করবে।
সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে কাজ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। ব্রিফিংয়ের আগে আনিসুজ্জামান চৌধুরী অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে এসে সাক্ষাৎ করেন। গতকাল সোমবার আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ব্রিফিংয়ের সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) সচিব নাজমা মোবারেক, অর্থ বিভাগের দুই অতিরিক্ত সচিব মুনশি আবদুল আহাদ ও মোহাম্মদ আবু ইউছুফ উপস্থিত ছিলেন।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ পুনর্বিবেচনা করতে পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি করা হয়েছে। ইআরডি সচিব ও এফআইডি সচিব এ কমিটির সদস্য।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হতে চাচ্ছি। সে বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের বৈদেশিক নির্ভরতা বেড়ে গেছে ২০১০ সাল থেকে। কমে গেছে অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস। ৭ শতাংশের নিচে নেমে গেছে কর-জিডিপির হার। যদি আরও ঋণ নিতে হয়, আরও চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে।’
এলডিসি থেকে উত্তরণের সূচকগুলো কি ভুয়া ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘মনে করুন সব সঠিক, কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি কী? আমরা যে বাজারসুবিধাটা পাই, তার ৮৫ শতাংশই হচ্ছে তৈরি পোশাক খাতে। এখানে আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। ২০১৮ সাল থেকে বলছি, এলডিসি থেকে বের হব। ৭ বছরেও একটা খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমল না কেন?’
এলডিসি থেকে উত্তরণ স্থগিত থাকবে কি না, জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, ‘এখনো সেই সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। ব্যবসায়ী ও পোশাক শিল্পের মালিকদের সঙ্গে বসতে হবে। এখনই তা বলতে পারব না।’
বাংলাদেশ চাইলেই কি তা স্থগিত করতে পারবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘এটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হাতে নয়। তবে আমরা পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারি। আবেদনের সঙ্গে যথাযথ কারণগুলো উল্লেখ করতে হবে এবং একটা বিশ্বাসযোগ্য রূপরেখা দিতে হবে। আমরা সেদিকেই যাব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট আম দ র সরক র এলড স
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা
জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।
হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
আবেদনে যোগ্যতার শর্ত
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—
—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।
—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।
—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।
বয়সসীমা—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।
—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।
—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।
—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।
বৃত্তির সুবিধা
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:
১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।
২। মাসিক ভাতা।
—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।
—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।
—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।
—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।
—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।
—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।
—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।