প্রতিবন্ধী গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ, সন্তান জন্মের চার ঘণ্টা পর মৃত্যু
Published: 12th, March 2025 GMT
গৃহকর্মীর কাজ করতেন বাক্প্রতিবন্ধী নারী (৪২)। সেই বাড়িতে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হন বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার ছয় মাস পর তাঁরা বিষয়টি বুঝতে পারেন। ভুক্তভোগী ওই নারী সন্তান জন্ম দেওয়ার চার ঘণ্টা পর মারা গেছেন।
এই ঘটনা চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার। গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই নারী নিজ বাড়িতে মেয়েশিশুর জন্ম দেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে শাহরাস্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
এর আগে ৩ মার্চ ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগী নারীর ভাই বাদী হয়ে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে মেহেদী হাসান ওরফে প্রদীপ (২৫) নামের এক তরুণকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ওই রাতে মেহেদীকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাক্প্রতিবন্ধী নারী নানার বাড়িতে থাকতেন। তাঁর মা অসুস্থ। তিনি গৃহকর্মীর কাজ করে সংসার চালাতেন। গৃহকর্মীর কাজ করার সময় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন মেহেদী। এ ঘটনা ঘটে গত বছরের ১ থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে। এ সময় তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় এবং কাউকে এ বিষয়ে জানালে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পারেন।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘আমার বোনকে গত ১ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে জানান, আমার বোন ২৫ সপ্তাহ ৫ দিনের অন্তঃসত্ত্বা। আমার বোনকে ইশারার মাধ্যমে এহেন কার্যকলাপের বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ইশারার মাধ্যমে বিবাদীকে (মেহেদী) শনাক্ত করে। বিবাদী জানতে পেরে আত্মগোপনে চলে যায়। বিবাদীর ছবিসহ অন্যান্য একাধিক ছবি প্রদর্শন করার পর আমার বোন তাকে শনাক্ত করে। ঘটনার বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করে আমার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় এজাহার দায়ের করতে সামান্য বিলম্ব হলো।’
ভুক্তভোগী নারীর ফুফাতো ভাই বলেন, ধর্ষণের ফলে তাঁর বোন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার সে ইশারার মাধ্যমে অভিযুক্ত মেহেদীকে দেখিয়ে দিয়েছিল। পরে মেহেদী পালিয়ে যান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কচুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান বলেন, ‘বাক্প্রতিবন্ধী নারী অসুস্থ ছিলেন। সেই অবস্থায় তাঁর সঙ্গে ইশারা-ইঙ্গিতে কথা বলেছি। তাঁর পরিবার ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতা নিয়েছি। তারপর অনেকটা নিশ্চিত হয়ে মামলা নেওয়া হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ব ন গ হকর ম পর ব র ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ