তথ্য চাওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে নাটোরের সিংড়ায় এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সিংড়া উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আবদুর রশিদ দৈনিক সমকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।

স্থানীয় সাংবাদিকদের অভিযোগ, তথ্য অধিকার আইনে খাসপুকুরের তথ্য চাওয়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে আবদুর রশিদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জেরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলার সাংবাদিকেরা আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসমাউল হকের দাবি, সারা দেশে চলমান ‘ডেভিল হান্ট অভিযানের’ অংশ হিসেবে আবদুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বিগত দিনে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। চাঁদাবাজি ও মারপিটের অভিযোগে গত বছর উপজেলার ইতালি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সিংড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি আবদুর রশিদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে খাস জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে আবেদন করেন। তথ্য দিতে দেরি হওয়ায় তিনি উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে (তথ্য কর্মকর্তা) ফোন দিয়ে কারণ জানতে চেয়েছিলেন। তখন ওই কর্মকর্তা অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন। এ কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমন প্রেক্ষাপটে হঠাৎ আবদুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নাটোরের ইউনিক প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ বলেন, আবদুর রশিদ একজন মূল ধারার সাংবাদিক। তাঁকে খোঁড়া অজুহাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিংড়া থানা-পুলিশের এই কর্মকাণ্ডে সরকারের ‘ডেভিল হান্ট অভিযান’ বিতর্কিত হবে।

তবে আবদুর রশিদকে গ্রেপ্তারের সঙ্গে তথ্য চাওয়ার বিষয়টির কোনো সংযোগ নেই বলে দাবি করেছেন ইউএনও মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক আবদুর রশিদ কিছু তথ্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন, বিষয়টি সত্য। ব্যস্ততার কারণে কিছুটা দেরি হলেও আমরা তথ্যগুলো দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম, পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারের সঙ্গে তথ্য চাওয়ার কোনো যোগসূত্র নাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর কর মকর ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। শুধু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।  

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির জাতীয় স্থানীয় কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহরুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ মাসুদুজ্জামান মাসুদ ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও রয়েছেন। 

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।

এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৮ আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যে সমস্ত আসনে আগ্রহী সে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেই। আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করবো। এটা আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, এর মধ্যেই পরিবর্তন হতে পারে।

বিশেষ করে, আমাদের শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা এবং স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে কোনো আসনে পরিবর্তন আনবে, সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনবেন।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ