Prothomalo:
2025-11-03@13:55:29 GMT

রমজানে কেন বিষণ্নতা আসে

Published: 13th, March 2025 GMT

রমজানের পরিবেশে, যখন একদিকে বাজারে কেনাকাটা, পারিবারিক মিলনমেলা, বিশেষ দাওয়াত এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রস্তুতির তাগিদ থাকে, তখন অনেকেই নেতিবাচক অনুভূতির দিকে ধাবিত হন। রমজান ঘিরে চারদিকে আধ্যাত্মিকতার আবেশ ছড়িয়ে পড়লেও তারা ক্রমশ বিষণ্নতায় যুবে যান।

 তবে এই হতাশা বা বিষণ্নতার অনুভূতি নতুন নয়; অনেকেই এ ধরনের অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে চান না, কারণ তারা ভয় পায় সমাজে ভুল ধারণা জন্মাবে বা বিব্রত হতে হবে। আসলে, এর কারণগুলো গভীর এবং সচেতনতার মাধ্যমে এ সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়।

ছুটির দিন বা উৎসবের সময় সাধারণত সবাই খুশি হয়, আনন্দে মেতে ওঠে। কিন্তু অনেকের জন্য তা হয়ে ওঠে বেদনার। যদিও বিষণ্নতা যে-কোনো সময় হতে পারে, তবে রমজানে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও হতাশার মাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে এবং একাকিত্বের অনুভূতিকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে। এই সমস্যার কয়েকটি কারণ হলো:

আরও পড়ুনরোজার কাজা কী০১ মার্চ ২০২৫

সামাজিক একাকিত্বের তীব্রতা

 ‘সামাজিক একাকিত্ব’ হলো বিষণ্নতার অন্যতম প্রধান কারণ, বিশেষত ঈদ ও উৎসবের সময় এমন অনুভূতি হতে পারে। অনেকের বন্ধু বা পরিবারের পরিসর থাকে ছোট, অথবা বিভিন্ন কারণে তারা সামাজিক সম্পর্কের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকেন—যেমন ভ্রমণ, অসুস্থতা অথবা কাজ ও পড়াশোনার চাপের তারা অন্যদের থেকে দূরে সরে পড়েন, যা তাদের একাকিত্ব ও বিষণ্নতা অনুভূতি তীব্র করে তোলে।

এ ছাড়া, অন্যদের আনন্দময় সময় কাটাতে দেখা, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া বা গণমাধ্যমে প্রচারিত ‘সুখী মুহূর্তগুলো’ তাদের আরও একা ও বিষণ্ন অনুভব করায়। তারা আরও বেশি যোগাযোগে নিরুৎসাহী হয়ে পড়েন।

 তবে, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, একাকিত্বের অনুভূতি মোকাবিলা করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সচেতনভাবে এবং পরিকল্পিতভাবে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়া এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটানো। সরাসরি একসঙ্গে না থেকেও এভাবে এই অনুভূতিগুলোর মোকাবিলা করা যেতে পারে।

আরও পড়ুনরোজার নিয়ত: বাংলা উচ্চারণ ও কখন করবেন২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অতীতে ভেসে যাওয়া

 অতীতের সময়গুলোও অনেক সময় এক ধরনের হীনমন্যতা বা দুঃখবোধের জন্ম দেয়। প্রিয় মানুষদের এবং ভালো সময়গুলো মনে করে অনুভব হতে পারে যে, সেই পুরোনো দিনগুলি চিরতরে চলে গেছে। অতীত ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আমরা যত সুখী হতে চাই না কেন, আনন্দের সেই ক্ষণগুলো আর ফিরে আসবে না।

 তাই সবচেয়ে ভালো হলো, বর্তমান মুহূর্তে মনোনিবেশ করা এবং তাতে কৃতজ্ঞ থাকা। আপনি যদি জীবনকে পরিপূর্ণ অনুভব করতে চান, তবে মাইন্ডফুলনেস বা সচেতনতা অনুশীলন করতে পারেন, যা আপনাকে প্রতিটি পর্যায়ের মূল্য বুঝতে সহায়তা করবে এবং জীবনের প্রতিটি সুযোগকে মূল্যায়ন করতে শেখাবে।

 উচ্চাশা ও হতাশা

 উৎসব ও আনন্দের মুহূর্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী না হলেও হতাশ বা বিষণ্ন লাগতে পারে। অধিক প্রত্যাশা কখনো কখনো অযৌক্তিক চিত্র তৈরি করে, যা বাস্তবে পূরণ হওয়া প্রায় অসম্ভব। তখন আপনার মন শুধু খুঁজে বেড়াবে যা আপনি হারিয়েছেন বা যা ছিল না সেই সব, অথচ যা আপনার কাছে আছে, তা মোটেও কম কিছু নয়।

 অনেক মুসলিমকে দেখা যায়, রমজান মাসে নিজেকে চূড়ান্ত ধার্মিকরূপে উপস্থাপন করার প্রত্যাশা রাখেন। কিন্তু নিত্য দিনের দায়িত্ব বা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি তাদের তেমন হতে দেয় না। এ-কারণে নিজেকে বারংবার দোষারোপ করেন।

 এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে ‘ইনভার্স টু-ডু লিস্ট’ তৈরি করা যেতে পারে। আপনার উচ্চাশার সঙ্গে সক্ষমতা ও সুযোগের মিল রেখে তালিকাটি তৈরি করলে মানসিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ থাকা সহজ হবে।

আরও পড়ুনদাউদ (আ.

)-এর মতো রোজা রাখা১৯ এপ্রিল ২০২৪

আর্থিক চাপ ও অতিরিক্ত কেনাকাটা

 রমজান মাসে বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, যা পরিবারের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে। ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে মধ্যবিত্তদের মাঝে প্রবল মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়, অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে না পারায় তারা হতাশ হয়ে পড়েন।

 এ কারণে শুরুতেই মাসব্যাপী বাজেট নির্ধারণ করা এবং সংরক্ষণ করা যায় এমন পণ্য বড় অফার ও ছাড়ের সময়গুলিতে কিনে রাখা যেতে পারে। এছাড়া, অনেকে রমজানের আগেই বাজার সেরে ফেলেন বা ইফতারের পরে বাজার করতে যান, যাতে ক্ষুধার সময় অতিরিক্ত কেনাকাটা থেকে বিরত থাকতে পারেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ঠিক থাকে।

ক্লান্তি ও অবসাদ

 রমজান মাসে রোজার সঙ্গ সম্পর্কিত একটি সাধারণ অনুভূতি হলো ক্লান্তি ও অবসাদ, যা অনেকের মধ্যে বিষণ্নতার সৃষ্টি করতে পারে। ইফতার বা সাহরিতে অতিরিক্ত তেল এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার শরীর নিঃশেষিত করে।

এছাড়া, সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা না থাকা এবং ঘুমের অভাবও ক্লান্তি ও অবসাদের অন্যতম কারণ। রমজানে দৈনন্দিন অফিস কাজ এবং দীর্ঘ আমল-ইবাদত সম্পন্ন করতে হয় যেহেতু, তাই শরীর ও মনকে যথেষ্ট বিশ্রাম না দিলে রোজাদাররা শারীরিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েন।

 এই বিষয়ে, মিসরের মানসুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ, ডক্টর আইমান শাহাতার পরামর্শ হলো, রমজানে শক্তি পুনরুদ্ধার এবং ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে সুষম খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং ভালোভাবে বিশ্রাম নিতে হবে, তাহলে শারীরিকভাবে সুস্থ ও মানসিকভাবে প্রশান্ত থাকা সম্ভব হবে।

 সূত্র: আলজাজিরা ডট নেট

আরও পড়ুনরোজা কি ভেঙে গেল?২৭ মার্চ ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ক ত ব র অন ভ ত রমজ ন ন করত আনন দ র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। শুধু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।  

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির জাতীয় স্থানীয় কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহরুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ মাসুদুজ্জামান মাসুদ ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও রয়েছেন। 

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।

এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৮ আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যে সমস্ত আসনে আগ্রহী সে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেই। আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করবো। এটা আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, এর মধ্যেই পরিবর্তন হতে পারে।

বিশেষ করে, আমাদের শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা এবং স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে কোনো আসনে পরিবর্তন আনবে, সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনবেন।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ