সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্ব নিরসনে পদোন্নতির নিয়মে সংস্কার আনতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার সিন্ডিকেটের ২৩৫তম সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর ৬ জুন তৎকালীন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ২৩২তম সিন্ডিকেটে শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে একটি আইন করা হয়; এটি আগে ছিল না। কয়েকজন শিক্ষকের পরামর্শে ভিন্নমতাবলম্বী শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা না দিতে উপাচার্য এই কালোআইন করেছিলেন বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। ওই নিয়মানুযায়ী, যেসব শিক্ষক অধ্যাপকের দ্বিতীয় গ্রেডের যোগ্যতা পূরণের পর যথাসময়ে আবেদন করবেন, তাঁরা প্রাপ্যতার দিন থেকে দ্বিতীয় গ্রেডের জ্যেষ্ঠতা ও আর্থিক সুবিধা প্রাপ্য হবেন। দেরি করে আবেদনকারী শিক্ষকদের দ্বিতীয় গ্রেডের জ্যেষ্ঠতা ও আর্থিক সুবিধা সিন্ডিকেটের পর দিন থেকে কার্যকর হবে।

এই নিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষকের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে ‘শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে বিভাগীয় প্রধান হলেন সহ-উপাচার্য’ শিরোনামে ১১ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর এ নিয়মের সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানান, অধ্যাপকদের জ্যেষ্ঠতার নিয়মটি সংস্কার করা হয়েছে। নতুন নিয়মানুযায়ী, দ্বিতীয় গ্রেডে জ্যেষ্ঠতা প্রাপ্তির যথা সময়ে শিক্ষকেরা আবেদন করবেন, এটাই কাঙ্ক্ষিত। যদি কেউ যথাসময়ে আবেদন না করেন, যখন আবেদন জমা পড়বে সেই তারিখ থেকে আবেদনকারী শিক্ষকের দ্বিতীয় গ্রেডে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য সাজেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, নতুন নিয়মানুযায়ী শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ হবে। সিন্ডিকেটের পূর্ণাঙ্গ রেজল্যুশন বের হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বোঝা যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ