শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্ব নিরসনে পদোন্নতির নিয়ম সংস্কার হচ্ছে
Published: 17th, March 2025 GMT
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্ব নিরসনে পদোন্নতির নিয়মে সংস্কার আনতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার সিন্ডিকেটের ২৩৫তম সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর ৬ জুন তৎকালীন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ২৩২তম সিন্ডিকেটে শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণে একটি আইন করা হয়; এটি আগে ছিল না। কয়েকজন শিক্ষকের পরামর্শে ভিন্নমতাবলম্বী শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা না দিতে উপাচার্য এই কালোআইন করেছিলেন বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। ওই নিয়মানুযায়ী, যেসব শিক্ষক অধ্যাপকের দ্বিতীয় গ্রেডের যোগ্যতা পূরণের পর যথাসময়ে আবেদন করবেন, তাঁরা প্রাপ্যতার দিন থেকে দ্বিতীয় গ্রেডের জ্যেষ্ঠতা ও আর্থিক সুবিধা প্রাপ্য হবেন। দেরি করে আবেদনকারী শিক্ষকদের দ্বিতীয় গ্রেডের জ্যেষ্ঠতা ও আর্থিক সুবিধা সিন্ডিকেটের পর দিন থেকে কার্যকর হবে।
এই নিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষকের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে ‘শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতার দ্বন্দ্বে বিভাগীয় প্রধান হলেন সহ-উপাচার্য’ শিরোনামে ১১ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর এ নিয়মের সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানান, অধ্যাপকদের জ্যেষ্ঠতার নিয়মটি সংস্কার করা হয়েছে। নতুন নিয়মানুযায়ী, দ্বিতীয় গ্রেডে জ্যেষ্ঠতা প্রাপ্তির যথা সময়ে শিক্ষকেরা আবেদন করবেন, এটাই কাঙ্ক্ষিত। যদি কেউ যথাসময়ে আবেদন না করেন, যখন আবেদন জমা পড়বে সেই তারিখ থেকে আবেদনকারী শিক্ষকের দ্বিতীয় গ্রেডে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য সাজেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, নতুন নিয়মানুযায়ী শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ হবে। সিন্ডিকেটের পূর্ণাঙ্গ রেজল্যুশন বের হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বোঝা যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।