সজল-নুসরাতের ‘কন্যা’ গানে উৎসবের আবহ
Published: 18th, March 2025 GMT
জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ‘জ্বীন থ্রি’ সিনেমা ঈদুল ফিতরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। মুক্তিকে সামনে রেখে সিনেমাটির ‘কন্যা’ শিরোনামের গান প্রকাশ করেছেন নির্মাতারা।
উৎসবের আবহে নির্মিত এ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান মাহমুদুল ও দিলশাদ নাহার কনা। রবিউল ইসলাম জীবনের লেখা গানটির সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন ইমরান।
‘পথে পথে হাসি মেখে, ফুলেরা ঘ্রাণ ছড়াল/ উড়ে উড়ে কুহু সুরে, পাখিরা গান শোনাল’— এমন কথার গানের দৃশ্যায়নে ফুটে উঠেছে উৎসবের ছাপ। ভিডিওতে দেখা যায় ‘জ্বীন থ্রি’ সিনেমার দুই অভিনয়শিল্পী আব্দুন নূর সজল ও নুসরাত ফারিয়াকে। দুজনের পোশাকেও রঙের ছড়াছড়ি। দুজনের নাচও প্রাণবন্ত।
আরো পড়ুন:
মধুমিতার বিয়ে
তেতাল্লিশে থেমে গেল অভিনেত্রীর জীবন
সিনেমাটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া জানিয়েছে, কন্যা এমন একটি গান, যা বাঙালির যেকোনো উৎসবে (যেমন: ঈদ, ফাল্গুন, বৈশাখ, গায়েহলুদ, বিয়ে বা যেকোনো পারিবারিক বা পাবলিক অনুষ্ঠান) সবাই গাইতে পারবেন, নাচতে পারবেন, বাজাতে পারবেন। ফলে আমরা মনে করি, এই গানের মালিক বাংলা ভাষাভাষীর সব মানুষ। এই গান আপনার, আমার সবার। এ কারণে গানটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। চাইলেই যে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের অ্যাকাউন্টে শেয়ার করতে পারবেন।
‘জ্বীন’ সিরিজের প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে। নাদের চৌধুরী পরিচালিত সিনেমাটিতে পূজা চেরির বিপরীতে ছিলেন সজল। ‘জ্বীন টু’ সিনেমায় না থাকলেও সজল ফিরেছেন তৃতীয় কিস্তিতে। অন্যদিকে এবারই প্রথম ‘জ্বীন’ সিনেমায় যুক্ত হয়েছেন নুসরাত ফারিয়া। এই সিনেমা দিয়ে সাত বছর পর জাজ মাল্টিমিডিয়ার ঘরে ফিরলেন তিনি।
হরর ঘরানার ‘জ্বীন থ্রি’ নির্মিত হয়েছে সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন কামরুজ্জামান রোমান। ‘জ্বীন টু’ সিনেমার পরিচালকও ছিলেন তিনি।
আশাবাদ ব্যক্ত করে পরিচালক কামরুজ্জামান রোমান বলেন, “দর্শক পর্দায় যে ধরনের হরর গল্প দেখতে চান, তেমন গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘জ্বীন থ্রি’। সিনেমা হলে দর্শকের জন্য অনেক চমক অপেক্ষা করছে। আশা করি, তারা নিরাশ হবেন না।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র পর চ ল প রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।