বাংলাদেশে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী স্মার্টফোন আনলো অনার
Published: 20th, March 2025 GMT
দেশের বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দ্য আনব্রেকেবল ফোন’ হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী অনার এক্স৯সি স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে অনার বাংলাদেশ। টেকসই ও স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে ফোনটি মিড-রেঞ্জ ক্যাটাগরিতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।
‘দ্য আনব্রেকেবল ফোন’ হিসেবে পরিচিত অনার এক্স৯সি ফোনটির ড্রপ টেস্টে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়—২৬৪ জন একইসাথে মোবাইল ফোনটি ওপর থেকে ফেলে দিয়ে এর স্থায়িত্ব টেস্ট করে। এ টেস্টের মাধ্যমে অনারের এ স্মার্টফোনটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী ফোন হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
স্মার্টফোনটিতে স্থায়িত্বের সাথে নিশ্চিত করা হয়েছে সর্বোচ্চ সুরক্ষা, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, অসাধারণ ডিসপ্লে, উন্নত ক্যামেরা ও অত্যাধুনিক এআই অভিজ্ঞতা। ফোনটির ডিজাইনেও রয়েছে নান্দনিকতা।
আরো পড়ুন:
নতুন দুই ফোন আনলো আইটেল
দেশের বাজারে রিয়েলমির পানিরোধী ফোন
অনার এক্স৯সি-তে নতুন প্রজন্মের অ্যান্টি-ড্রপ ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে, ২ মিটার উচ্চতা থেকে পড়লেও ফোনটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আল্ট্রা-টেম্পারড গ্লাস ও রেজিস্ট্যান্স শিল্ড ব্যবহার করে স্মার্টফোনটি এর আগের মডেল এক্স৯বি -এর তুলনায় ১৬৬ শতাংশ বেশি টেকসই করা হয়েছে। ফোনটিতে তিন স্তরের পানিরোধী কাঠামো রয়েছে, যা ৩৬০ ডিগ্রি ওয়াটার প্রোটেকশন প্রদান করে এবং এর আইপি৬৫এম ধুলা প্রতিরোধী।
প্রথম স্মার্টফোন হিসেবে ফোনটিতে সর্বোচ্চ ব্যাটারি সক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। অনার এক্স৯সি -তে ব্যবহার করা হয়েছে সুবিশাল ৬৬০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার-আওয়ার সিলিকন-কার্বন ব্যাটারি। এর ৬৬ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির ফলে মাত্র ৪২ মিনিটে ফোনটি শূন্য থেকে থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ হবে। মাত্র ৫ মিনিটের চার্জে ৭ ঘণ্টার অতিরিক্ত ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যাবে। এছাড়াও, স্মার্টফোনটির ব্যাটারি ডিএক্সওমার্কের বৈশ্বিক ব্যাটারি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। স্মার্টফোনটিতে আর্মর-লেভেল প্রোটেক্টিভ কোটিং ব্যবহার করা হয়েছে, যা নিশ্চিত করবে উন্নত এনার্জি ম্যানেজমেন্ট।
অনার এক্স৯সি’র ক্যামেরায় রয়েছে এআই-পাওয়ারড ১০৮ মেগাপিক্সেল সমৃদ্ধ আল্ট্রা-সেন্সিং ক্যামেরা, যা ১/১.
স্মার্টফোনটি নিয়ে অনার বাংলাদেশের হেড অব বিজনেস আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “দেশের বাজারে অনার এক্স৯সি উন্মোচন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এটি আমাদের তৈরি করা সবচেয়ে শক্তিশালী স্মার্টফোন। টেকসই এ ফোনটিতে নিশ্চিত করা হয়েছে সুদীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ। অনার এক্স৯সি’র উন্নত ক্যামেরা প্রযুক্তি স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। আমাদের বিশ্বাস, অনার এক্স৯সি -এর দুর্দান্ত ফিচারগুলো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা পছন্দ করবেন। ক্রেতাদের জন্য মানসম্পন্ন ও টেকসই পণ্য নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
দেশের বাজারে টাইটেনিয়াম পার্পল, টাইটেনিয়াম ব্ল্যাক ও জেড সায়ান রঙে ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে। ১২ জিবি + ২৫৬ জিবি সংস্করণের অনার এক্স৯সি স্মার্টফোনটির বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র কর ন শ চ ত কর ট কসই
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভোল পাল্টে’ সক্রিয় কিশোর গ্যাং, অতিষ্ঠ বাসিন্দারা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এলাকায় নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবন, মারামারি, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। তবে এখন ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিড়েছে তারা।
সম্প্রতি এলাকাটিতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন জাহাঙ্গীর আলম (৫২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। মসজিদের পাশে জুয়ার আসর বসানো ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁর ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ৩ এপ্রিল তাঁর ওপর হামলা করা হয়। এরপর গত শনিবার তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকজন স্থানীয় তরুণ। ওই তরুণেরা রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় মিছিল-সমাবেশে কিশোরদের ব্যবহার করে আসছেন। ফলে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাও এসব কিশোরকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশ্রয় দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আগে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল চর আবাবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দারের হাতে। তাঁরা এসব কিশোরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই কিশোরেরা ভোল পাল্টে বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় হচ্ছে। আবদুর রহিম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি এসব তরুণকে নতুন করে আশ্রয়–প্রশ্রয় দিচ্ছেন। রহিম ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হলেও তাঁর পদপদবি নেই।
জাহাঙ্গীর আলম খুনের ঘটনায় আবদুর রহিমকেও আসামি করা হয়। মামলার পর তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আমি প্রশ্রয় দিচ্ছি—এমন অভিযোগ প্রায় করা হচ্ছে। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিদ্দিক সর্দার বলেন, ‘কিশোর গ্যাংকে আমি কখনো প্রশ্রয় দিইনি। তারা (কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা) আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করত।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দলীয় কোনো নেতা-কর্মী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রশ্রয় দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো নেতা-কর্মীর অপকর্মের দায় দল নেবে না।
জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত ৭ এপ্রিল লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলার আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম। আদালত রায়পুর থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, মসজিদের আশপাশে জুয়ার আসর ও মাদক সেবন করত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে সাব্বির হোসেন, জুবায়ের হোসেনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৮–১০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা করেছেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।
জানতে চাইলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কিশোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, কিশোর-তরুণদের খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের ফেরাতে না পারলে অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। কেউ যাতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।