নাটোরের লালপুর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কর্মকার (৫২) ও তাঁর এক সহযোগীকে পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহত আরেকজন হলেন খোকন কর্মকার (৪৫)। তাঁরা দুজনই উপজেলার বিলমাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল রাতে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

লালপুর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি দিপেন্দ্রনাথ সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় শ্রী শ্রী ফকির চাঁদ গোঁসাইয়ের আশ্রম কমিটি গঠনের জের ধরে এই হামলা চালানো হতে পারে।

উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে সঞ্জয় ও খোকন এক মৃত স্বজনকে দেখে নিজেদের বাড়ি ফিরছিলেন। রাত ১০টার দিকে তাঁরা রামকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছালে তাঁদের ওপর রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তারা সঞ্জয়ের বাঁ হাত ভেঙে দেয় এবং বুক ও পায়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। খোকনের ডান পা, বুক ও পেটে আঘাত করা হয়েছে। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সঞ্জয় কর্মকার বলেন, তিনি আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় প্রতিপক্ষ উত্তম মণ্ডলের ইন্ধনে প্রশাসন নতুন করে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়। এ ব্যাপারে তিনি নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা করেন। গতকাল তাঁর পক্ষে রায় হয়। এর জেরে তাঁর ওপর হামলা হতে পারে।

তবে উত্তম মণ্ডল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানেন না।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ