বিশ্বের সুন্দরতম ১০ রমজান-ঐতিহ্য
Published: 20th, March 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে দুই বিলিয়নেরও বেশি মুসলমান যখন পবিত্র রমজান মাস উদ্যাপনে একত্র হয়, তখন একই সঙ্গে বিভিন্ন সংস্কৃতি, প্রথা ও আনন্দঘন মুহূর্তগুলোর বৈচিত্র্যও দর্শনীয় হয়ে ওঠে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের ১০টি সুন্দরতম রমজানে ঐতিহ্যের কথা।
১. মিসরের রঙিন ফানুস
রমজান মাসে মিসরের অন্যতম পরিচিত ঐতিহ্য হলো সন্ধ্যায় ও রাতের বেলা রঙিন ঝলমলে ফানুস জ্বালানো।
এই ঐতিহ্যটি সম্ভবত ফাতিমীয় খিলাফতের সময় শুরু হয়। খলিফা আল-মুইজ লিদিনিল্লাহ কায়রো আগমনের সময় রঙিন ফানুস দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। সেই থেকে রমজান মাসে মিশরের রাস্তাঘাট ফানুসের আলোয় আলোকিত হয় এবং রোজাদারদের মুহূর্তগুলো আনন্দঘন করে তোলে।
২.
ভারতের ‘সাহরিওয়ালা’
মুঘল আমলে সাহরিওয়ালারা শেষ রাতে সাহরির জন্য সবাইকে জাগিয়ে তুলতেন। আজও ভারতের দিল্লির সাহরিওয়ালা সেই পুরোনো মুঘল ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন। দিল্লিতে তারা ‘জোহরিদার’ নামেও পরিচিত, মানে নগর প্রহরী। এই প্রহরীরা রাতে পবিত্র কোরআনের আয়াত, আল্লাহ ও নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম উচ্চারণ করে ধ্বনি দেন, যাতে সবাই সাহরির জন্য জেগে উঠতে পারেন এবং ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নিতে পারেন।
মরক্কোতে রমজান মাসে ‘নাফার’ নামে পরিচিত নগর প্রহরীরা ভোরে পাড়ায় ঘুরে ঘুরে লোকজনকে নামাজের জন্য জাগিয়ে তোলেনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন ম স
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত