Prothomalo:
2025-11-03@13:55:28 GMT

ইতিকাফ কীভাবে করব 

Published: 23rd, March 2025 GMT

ইতিকাফ অর্থ অবস্থান করা, আবদ্ধ করা, আবদ্ধ থাকা বা আবদ্ধ রাখা। পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন, তাঁকে মুতাকিফ বলে। দুনিয়ার সব আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে, সব মোহ-মায়া ত্যাগ করে সব বাধা-বন্ধন উপেক্ষা করে একান্তভাবে আল্লাহ তাআলার সন্নিধানে যাওয়ার নাম ইতিকাফ।

ইবাদতের প্রাণকেন্দ্র মসজিদ। মসজিদের বিশেষ আমল হলো ইতিকাফ। আল্লাহ তাঅালা বলেন, ‘আমি ইব্রাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১২৫)

২০ রমজান সূর্যাস্তের আগে থেকে ঈদের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমজান পূর্ণ হয়ে ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইতিকাফ করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ কিফায়াহ। কোনো মসজিদ মহল্লায় কয়েকজন বা কোনো একজন আদায় করলে সবাই দায়মুক্ত হবেন। আর কেউই আদায় না করলে সবাই সুন্নত তরকের জন্য দায়ী থাকবেন। তবে যিনি বা যাঁরা আদায় করবেন, শুধু তিনি বা তাঁরাই সওয়াবের অধিকারী হবেন। 

রমজান মাসের শেষ দশকে রয়েছে মহিমান্বিত রজনী পবিত্র শবে কদর। ইতিকাফকারীর ২৪ ঘণ্টা ইবাদত হিসেবে গণ্য, তাই তাঁর শবে কদর নিশ্চিত। লাইলাতুল কদর হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। (সুরা কদর, আয়াত: ১-৫)

পুরুষদের মসজিদে ইতিকাফ করতে হয় আর নারীরা নির্দিষ্ট ঘরে বা নির্ধারিত কক্ষে ইতিকাফ করবেন। প্রাকৃতিক প্রয়োজন ও একান্ত বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফের ঘর বা কক্ষ থেকে বের হবেন না। অজু, ইস্তিঞ্জা বা পাক-পবিত্রতার জন্য বাইরে বের হলে কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন না বা সালাম বিনিময় করবেন না। কেউ সালাম দিলে তার জবাবও দেবেন না। তবে দরকার হলে ওই কক্ষের ভেতর থেকে বাইরের কাউকে ডাকতে পারবেন এবং কেউ ভেতরে এলে তাঁর সঙ্গে সালাম বিনিময় ও কথাবার্তা বলতে পারবেন। ইতিকাফ কক্ষে এমন কেউ অবস্থান করতে পারবেন, যাঁরা ইতিকাফ করছেন না। ইতিকাফ কক্ষটি যদি শয়নকক্ষ হয় এবং একই কক্ষে বা একই বিছানায় অন্য যে কেউ অবস্থান করেন, তাতেও কোনো ক্ষতি নেই; এমনকি স্বামীও পাশে থাকতে পারবেন; তবে স্বামী-স্ত্রীসুলভ আচরণ ইতিকাফ অবস্থায় নিষিদ্ধ; এর দ্বারা ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। ইতিকাফের সময় ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ো না, যখন তোমরা ইতিকাফরত থাকবে মসজিদে (বা নির্দিষ্ট স্থানে)।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

ইতিকাফ জামে মসজিদে যেমন করা যায়, তেমনি পাঞ্জেগানা মসজিদেও করা যায়। এ অবস্থায় জুমার নামাজ আদায়ের জন্য শুক্রবারে জামে মসজিদে যেতে হবে, এতে ইতিকাফের কোনো ক্ষতি হবে না। জুমার আজানের পরে যাবেন এবং নামাজের পর চলে আসবেন। আসা-যাওয়ার পথে বা জুমা মসজিদে কারও সঙ্গে কথা বলবেন না, প্রয়োজনে ইশারায় বা সংকেতে নির্দেশ ও উত্তর প্রদান করবেন। 

পাঞ্জেগানা মসজিদে ইতিকাফকালীন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করবেন। কখনো কোনো কারণে জামাত না হলে, নিজেই আজান-ইকামাত দিয়ে নামাজ আদায় করবেন। ওয়াক্তিয়া নামাজের জামাতের জন্য ইতিকাফ ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া যাবে না। এ জন্যই সম্ভব হলে জামে মসজিদে ইতিকাফ করাই উত্তম। 

সুন্নত ইতিকাফ কমপক্ষে এক দিন বা ২৪ ঘণ্টা রোজাসহ পালন করতে হয়। নির্দিষ্ট দিন সূর্যাস্তের আগে ইতিকাফের স্থানে প্রবেশ করবেন এবং পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন। রমজান ছাড়াও ইতিকাফ করা যায়, তবে তা হতে হবে রোজাসহ। ইতিকাফ আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তি জোগায় এবং গুনাহ থেকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করে। 

ইতিকাফকারী ইতিকাফ ছেড়ে বাইরে কোনো ইবাদতে শরিক হতে পারবেন না। যেমন মসজিদের বাইরে অনুষ্ঠিত জানাজা নামাজ ইত্যাদি। ইতিকাফকারী বাইরের ইবাদতে শরিক না হয়েও সেসব ইবাদতের সওয়াব পাবেন।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য় করব ন প রব ন র জন য আবদ ধ রমজ ন মসজ দ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিএনপির হাইকমান্ড। শুধু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।  

সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় বিএনপির জাতীয় স্থানীয় কমিটির একাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আজহরুল ইসলাম মান্নান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ মাসুদুজ্জামান মাসুদ ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে (সদর-বন্দর) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন তিনবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, বর্তমান সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুল।

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনটি এখনো ফাঁকা রেখেছে দলটি। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে গতবারের মতো জোটের প্রার্থী ছাড় পাবেন। তবে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী শাহ্ আলম, জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া, সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও রয়েছেন। 

নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম ও যুব উন্নয়নের সাবেক মহাপরিচালক এসএম ওলিউর রহমান আপেল।

নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খাঁন আঙ্গুর ও তার ভাতিজা বিএনপির সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন।

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জে) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন।

এদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২৩৮ আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা আন্দোলন করেছেন, তারা যে সমস্ত আসনে আগ্রহী সে সমস্ত আসনে প্রার্থী দেই। আমরা আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থী ঘোষণা করবো। এটা আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা, এর মধ্যেই পরিবর্তন হতে পারে।

বিশেষ করে, আমাদের শরিক দলগুলোর সাথে আলোচনা এবং স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে কোনো আসনে পরিবর্তন আনবে, সেক্ষেত্রে নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনবেন।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ