ইলন মাস্কের হাতে যাওয়ার পর টুইটারের নাম বদলে হয়েছে এক্স। সেই টুইটারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল তার সেই বিখ্যাত নীল লোগো। নাম বদলের পাশাপাশি এই সামাজিক মাধ্যমের লোগোও বদলে ফেলেছেন ইলন মাস্ক। এবার সেই নীল লোগো নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়েছে।

সানফ্রান্সিসকোয় অবস্থিত টুইটারের সদর দপ্তর আলোকিত করে থাকত সেই নীল পাখির লোগো। নীল রঙের পাখির লোগোকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আরও আগেই। সম্প্রতি সেই লোগো নিলামে তোলা হয়। সেখানে টুইটারের ‘নীল পাখি’র দাম উঠেছে প্রায় ৩৪ হাজার ৩৭৫ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ সেই নীল পাখিটিও আর রাখলেন না ইলন মাস্ক। খবর সিএনবিসি।

টুইটারের লোগোতে থাকা বিখ্যাত ওই পাখির নাম ‘ল্যারি’। কিংবদন্তি মার্কিন বাস্কেটবল খেলোয়াড় ল্যারি জো বার্ডের নাম অনুসারে টুইটারের লোগোর নামকরণ করা হয়েছিল। বিশালাকৃতির এই ব্লু বার্ড বা নীল পাখির ওজন ছিল ২৫৪ কেজি, উচ্চতায় যা ছিল ১২ ফুট ও চওড়ায় ৯ ফুট।

বিষয়টি হলো, টুইটার ইলন মাস্কের হাতে যাওয়ার পর তার প্রায় সবকিছুই বদলে ফেলেছেন ইলন মাস্ক। ছাঁটাই করেছেন বিপুলসংখ্যক কর্মী। কার্যালয়ের সজ্জায়ও এনেছেন পরিবর্তন। টুইটারের অফিসে ব্লু বার্ডের লোগোর পরিবর্তে জায়গা করে নিয়েছে ইংরেজি x অক্ষরের লোগো। এই লোগোতে নীলের চেয়ে কালো রং বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এর আগে মাস্ক টুইটার সম্পর্কিত বিভিন্ন জিনিস নিলামে তুলেছেন। টুইটার কার্যালয়ের আসবাব এবং রান্নাঘরের সরঞ্জামও নিলামে তোলা হয়েছিল।

টুইটারের সেই বিখ্যাত নীল পাখির লোগোর নিলাম হয়েছে আরআর অকশন নামের কোম্পানির মাধ্যমে। বিভিন্ন দুর্লভ জিনিসের নিলাম করে এই কোম্পানি। সংস্থার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ব্লু বার্ড বা নীল পাখির যতটা দাম আশা করা হয়েছিল, নিলামে দাম উঠেছে তার কিছুটা কম। তবে কে টুইটারের নীল পাখি কিনেছেন, তা জানানো যায়নি।

৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেন মার্কিন ধনকুবের ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর এই বেচাকেনা সম্পন্ন হয়।

২০২২ সালের জানুয়ারি থেকেই টুইটারের শেয়ার কেনা শুরু করেন মাস্ক। এপ্রিলের মধ্যে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ৯ দশমিক ১ শতাংশ শেয়ারের মালিক হন। টুইটার মাস্ককে তাদের পরিচালনা পর্ষদে যোগদানের আমন্ত্রণ জানায়। প্রথমে তিনি রাজি হয়ে পরে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। অযাচিতভাবে ১৪ এপ্রিল টুইটার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন ইলন মাস্ক। টুইটার পরিচালনা পর্ষদ এই প্রস্তাবে পাত্তা দেয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত ২৫ এপ্রিল ইলন মাস্কের ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনার প্রস্তাব গৃহীত হয় পরিচালনা পর্ষদে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ইট র র স ইলন ম স ক প রস ত ব ট ইট র ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 

বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।

ঢাকা/নাজমুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে