খার্তুম বিমানবন্দর ঘিরে ফেলেছে সেনাবাহিনী
Published: 26th, March 2025 GMT
সুদানের সেনাবাহিনী খার্তুম বিমানবন্দর ঘিরে রেখেছে। তারা রাজধানীর শেষ অবস্থান থেকে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে হটিয়ে দেওয়ার জন্য লড়াই করছে। বুধবার দুটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার যুদ্ধের পর সেনাবাহিনী খার্তুমের কেন্দ্রস্থলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল করে। দুই বছরের সংঘাতের পর এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী অগ্রগতি, যা বিশাল দেশটিকে প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ন্ত্রণ অঞ্চলে বিভক্ত করে দিচ্ছে।
বুধবার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা রাজধানীর দক্ষিণে তিবা আল-হাসানাব ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। এটিকে তারা মধ্য সুদানে আরএসএফের শেষ ঘাঁটি এবং খার্তুম রাজ্যে শেষ শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সামরিক সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনী শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বিমানবন্দর এবং আশেপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আরএসএফ দক্ষিণ খার্তুমে তাদের সেনাদের জড়ো করেছিল।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।