আলমডাঙ্গায় দাফনের আড়াই মাস পর বাড়ি ফিরল কিশোর
Published: 28th, March 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মরদেহ দাফনের আড়াই মাস পর বাড়ি ফিরেছে তোফাজ্জল হোসেন তুফান (১৫) নামে এক কিশোর। স্থানীয়রা বিষয়টিকে অলৌকিক বললেও সন্তানকে পেয়ে আবেগে আপ্লুত ছেলেটির বাবা-মা।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদি ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরে তুফান। তার বাবার নাম আবু সাঈদ। তাকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন গ্রামবাসী।
তুফানের বাবা আবু সাঈদ বলেন, “প্রায় তিন মাস আগে তুফান বাড়ির কাউকে কিছু না বলে অজানার উদ্দেশে চলে যায়। আড়াই মাস আগে সংবাদ পান গাইবান্ধায় এক কিশোর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। ওই কিশোরের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের কয়েকজন মিলে গাইবান্ধায় যাই। মরদেহের সঙ্গে সবাই তুফানের চেহারার মিল পান। সেখানে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ আলমডাঙ্গায় গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। পরে বৈদ্যনাথপুর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।”
সাঈদ জানান, তুফানের মা সেসময় দাবি করেছিলেন মরদেহটি তার সন্তানের নয়। চেহারায় মিল থাকলেও সেটি তুফানের মরদেহ নয়। তুফানের কোমরে কালো রঙের একটি দাগ ছিল। কিন্তু মরদেহের কোমরে সেই দাগ না থাকায় তার মা সন্তানের নয় বলে জানিয়েছিলেন।
তুফান জানায়, পরিবারের কাউকে না জানিয়ে সে একাই কাজের সন্ধানে ঢাকার শ্যামলী এলাকায় চলে যায়। সেখানেই দিনমজুরের কাজ করত সে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরেছে। এরপর জানতে পারে তার মত চেহারার একজনকে পরিবারের লোকজন মৃত ভেবে দাফন করেন।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘বিষয়টি আমিও শুনেছি। ছেলেটি আজ সকালে জীবিত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে এসেছে।”
ঢাকা/মামুন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আলমড ঙ গ মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।