যমুনা সেতুর ওপর দুর্ঘটনায় যানচলাচল ব্যাহত, পরে স্বাভাবিক
Published: 30th, March 2025 GMT
যমুনা সেতুর ওপর দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় উত্তরাঞ্চল-ঢাকাগামী যান চলাচল ব্যাহত হয়। সেতুর ওপর দুর্ঘটনার পর পরই বেশ কিছু যানবাহন পেছনে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এরপর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা এবং সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত সেতুর উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী উত্তর দিকের লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। খুলে দেওয়ার পরও ২ ঘণ্টা পর অবস্থা স্বাভাবিক হয়। এর আগে সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। নিয়ন্ত্রণে বিপাকে পরে পুলিশ।
যমুনা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিবিএর সাইট ম্যানেজার ও নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল আজ সকাল সাড়ে ১০টায় জানান, চালকরা হুড়াহুড়ি করে যেতে উত্তর লেনে ভোরে ঢাকা-উত্তরাঞ্চলগামী হানিফ পরিবহনের সঙ্গে আরেকটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। পরপরই আরেকটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে পিকআপের ধাক্কা লাগে। এরপর আরও কয়েকটি যানবাহনের ধাক্কা লাগে।
এতে উত্তর লেন দিয়ে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে সেতুর ওপর যানবাহনের দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়। পরে সকাল থেকে যানবাহন চলাচল খুলে দেওয়া হলো ১০টার পর স্বাভাবিক হয়। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিবিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির সকালে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলগামী ৪৫ হাজার ৪৮টি (ছোট, বড়, মাঝারি, হালকা ও ভারী ) যান সেতু পারাপার হয়েছে। যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের টোল আদায় হয়েছে তিন কোটি ২১ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা।
সিরাজগঞ্জ রোড হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুর রউফ জানান, সেতু কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী লেনটি দুবার বন্ধ রাখায় ভোর রাত থেকে অবস্থা খুব খারাপ ছিল। যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পেরেশানির মধ্যে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টার পর লেন খুলে দেওয়ায় অবস্থা স্বাভাবিক হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ স ত র ওপর দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।