ট্রেনের টিকিট নিয়ে কোনো কালোবাজারি হচ্ছে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 30th, March 2025 GMT
ঈদযাত্রা নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘আমি অনেক খুশি। এবার ঈদযাত্রাটা ভালো হচ্ছে। আর কালোবাজারির বিষয়ে আমাদের ছিল জিরো টলারেন্স।’
আজ রোববার ঈদযাত্রা উপলক্ষে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনে আসেন।
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমি স্টেশন ঘুরে দেখেছি, ট্রেনগুলো যে সময়ে ছাড়ার কথা, ঠিক সময়েই ছেড়েছে। কোনো ট্রেন ছাড়তে দেরি হচ্ছে না। এখানে কোনো কালোবাজারি হচ্ছে না। টিকিট পেতেও কারও কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, এখানে ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং দেওয়া হয়। এবারও তা–ই দেওয়া হয়েছে। এ জন্য অনেক সময় মনে হয় স্ট্যান্ডিং প্যাসেঞ্জার কেন? ঈদের সময় সবাইকে নেওয়ার জন্য স্ট্যান্ডিং পেসেঞ্জার নেওয়া হচ্ছে।’
ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকে শেষ মুহূর্তে ছাদে উঠে যায়। তখন তাকে টেনে নামাতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য অনেকে ছাদে যাচ্ছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা অনেক খুশি। তারা কমফোর্টেবল ভাবে যাত্রা করতে পারছে। অনেকের দাদা-দাদি, নানা-নানির সঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছে।’
সিডিউল বিপর্যয় রক্ষায় এবার কি মেকানিজম ছিল সরকারের পক্ষ থেকে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিডিউল বিপর্যয় ছাড়া ঈদযাত্রার যে মেকানিজম, সেটা আপনারা অনুসন্ধান করে বের করবেন। এই বিষয়ে আমাদের ছিল জিরো টলারেন্স। আমাদের কথা ছিল, কোনো ধরনের দুর্নীতি আমরা প্রশ্রয় দেব না। আমরা এখানে কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেইনি।’
জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘আমাদের যেসব কর্মকর্তা আছে রেলের, তাদের ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয়েছিল, তারা যেন ঠিকমতো তাদের দায়িত্ব পালন করে। আপনারা দেখেছেন অনেক সময় রেলের কর্মকর্তারা কালোবাজারি সঙ্গে জড়িত ছিল। আল্লাহর রহমতে এবার একজনও জড়িত হয় নাই।’
এ সময় রেলওয়ের মহাপরিচালক মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।