অস্টিওপোরোসিস মানে ছিদ্রযুক্ত হাড়। এ রোগে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং খুব সামান্য আঘাতেই ভেঙে যেতে পারে। এই রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেরুদণ্ড, কোমর ও কবজির হাড়।

হাড় দুর্বল হলেও শুরুতে কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না বলে অস্টিওপোরোসিসকে ‘নীরব রোগ’ বলা হয়। এ ছাড়া এই রোগের প্রথম লক্ষণই অনেক সময় হাড় ভেঙে যাওয়া। তখন আর কিছু করার থাকে না।

বিশ্বে ২০ কোটির বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। গবেষণা বলছে, প্রতি তিনজন নারীর একজন এবং পাঁচজন পুরুষের একজন কোনো এক পর্যায়ে অস্টিওপোরোটিক ভাঙনের শিকার হন। এটা শুধু ব্যথা বা বিকলাঙ্গতা নয়, অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি প্রতিবন্ধকতা ও মানসিক কষ্টের কারণ।

আরও পড়ুনসহজলভ্য এই ৮ খাবার থেকে পাবেন উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম০৮ আগস্ট ২০২৪ঝুঁকিতে যাঁরা

বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও পুষ্টিহীনতার কারণে রোগটির প্রকোপ বাড়ছে। অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড় ভাঙা নারীদের শয্যাশায়ী হওয়ার অন্যতম কারণ। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন—

৫০ বছরের বেশি বয়সী নারী ও পুরুষ।

রজঃনিবৃত্ত (মেনোপজ) পরবর্তী নারী।

ধূমপায়ী ও অতিরিক্ত মদ্যপানকারী ব্যক্তি।

যাঁরা কম ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন।  

কায়িক শ্রম বা ব্যায়ামের অভাব।

দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবনকারী।

আরও পড়ুনহাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় যে ৫টি পুষ্টি উপাদান১৮ জুলাই ২০২৫প্রতিরোধই সেরা উপায়

অস্টিওপোরোসিস সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়। তবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। জীবনযাপনে কয়েকটি পরিবর্তন আনলেই হাড় শক্ত রাখা যায়।

পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ: দুধ, দই, পনির, ছোট মাছ, শাকসবজি, তিল ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে।

ভিটামিন ডি: প্রতিদিন রোদে ১৫-২০ মিনিট থাকলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম: হাঁটা, সিঁড়ি ভাঙা, হালকা দৌড় বা ওজন নিয়ে ব্যায়াম হাড় মজবুত রাখে।

ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার: এগুলো হাড়ের গঠন ব্যাহত করে ও ক্যালসিয়াম শোষণ কমায়।

হাড়ের পরীক্ষা: বয়স ৫০ পার হলে বা ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সদস্য হলে বছরে অন্তত একবার হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করা উচিত।

শেষ কথা

পরীক্ষায় অস্টিওপোরোসিস প্রমাণিত হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করা হয়। অস্টিওপোরোসিস নীরবে হাড় ক্ষয় করে, কিন্তু সময়মতো সচেতনতা ও ব্যবস্থা নিলে এর ক্ষতি রোধ করা সম্ভব। ভালো খাদ্যাভ্যাস, রোদে থাকা, নিয়মিত ব্যায়াম, আর সময়মতো পরীক্ষা—এই চারটি অভ্যাসই আপনার হাড়কে ভাঙন থেকে রক্ষা করতে পারে।

আরও পড়ুনমেনোপজের পর হাড় ক্ষয় ঠেকাতে যা করবেন০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক য লস য় ম পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সাভারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার

ঢাকার সাভারে বাসায় ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী (২৫) ধর্ষণের অভিযোগে থানায় দায়ের হওয়া মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও থানার তেঁজকুনিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে সাভার মডেল থানার পুলিশ।

গ্রেপ্তার মিঠু বিশ্বাস (৩৫) সাভারের কমলাপুর গোয়ালিও এলাকার দেবেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাভারের একই এলকার সোহেল রোজারিও (৩৭), বিপ্লব রোজারিও (৪০)। সোহেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং বিপ্লব ও মিঠুর বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী তরুণী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তাঁর পরিবার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের একটি এলাকায় বসবাস করে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোরে তেজগাঁও থানার তেঁজকুনিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিঠুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ওই তরুণী সাভারে এক ছাত্রকে প্রাইভেট পড়ানোর পর বাসায় ফেরেন। কিন্তু এসে দেখেন বাসা তালাবদ্ধ। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর মা বাসায় তালা দিয়ে পাশের এক চা–দোকানির কাছে চাবি রেখে গেছেন। পরে তিনি দোকান থেকে চাবি নিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন।

ফেরার পথে সোহেল রোজারিও ওই তরুণীকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিছুদূর যাওয়ার পর সোহেলের সঙ্গে অন্য দুই আসামির দেখা হয়। এরপর তাঁরা ওই তরুণীকে অনুসরণ করতে থাকেন এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে নিজের বাসায় নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন সোহেল। এতে সহযোগিতা করেন অন্য দুই আসামি। ধর্ষণের পর সোহেল ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন ওই তরুণী।

আরও পড়ুনসাভারে বাসায় ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগে

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওয়াহাব বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রী তিনজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। এর পর থেকে বিভিন্ন স্থানে আসামিদের গ্রেপ্তারে থানার ঊর্ধ্বতন কমকর্তারা একাধিক টিম নিয়ে অভিযান শুরু করেন। আশা করছি, পলাতক বাকি দুই আসামিকেও দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

এদিকে আজ বিকেল চারটায় সাভার মডেল থানা প্রাঙ্গণে ধর্ষণের প্রতিবাদে ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ঢাকা জেলার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা, ঝুঁকিপূর্ণ নীরব-গহিন এলাকায় পর্যাপ্ত লাইটিং, সিসিটিভি ক্যামেরা ও টহলের ব্যবস্থা এবং সাভারে খুন-গুম-ধর্ষণের জন্য যৌথ বাহিনীর স্পেশাল সেল গঠন করা।

আরও পড়ুনসহপাঠীকে ‘ধর্ষণে’ জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে বিইউপির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ১৬ ঘণ্টা আগে

ঢাকা জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বকারী মেহরাব সিফাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে নিত্যদিনের পত্রিকায় ধর্ষণকাণ্ড খবর না হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এটি নিশ্চত করতে ধর্ষণের মতো বর্বরোচিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারে কোনো ধরনের কালক্ষেপণ করা যাবে না। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। সাভারে প্রতিটি এলাকায় জনগণের চলাচল নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে হবে। যৌথ বাহিনীর স্পেশাল সেল গঠনের মধ্য দিয়ে ভুক্তভোগীরা যেন দ্রুত সহায়তা পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আন্দোলনের মুখ থেকে রাকসুর জিএস আম্মার
  • সাভারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
  • ধর্মের জন্য অভিনয়কে বিদায়: বিয়ে করে সমালোচনার মুখে জাইরা
  • জানমালের নিরাপত্তা যেখানে, আ.লীগের ভোটও সেখানে: মুফতি ফয়জুল 
  • উপদেষ্টারা জানেন নাকি, ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা, আহা মধু মধু মধু...
  • ছাত্ররা যেমন শিক্ষকদের সম্মান করেন, শিক্ষকদেরও ছাত্রদের প্রতি সম্মান দেখানো জরুরি: ইমরান রহমান
  • নেতৃত্বের তিন দিক, আপনি কোন দিকে?
  • তওবা শুধু মুখের নয়, হৃদয়েরও
  • সাভারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার