দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এখন অন্য রকম চিত্র। রোববার সকাল থেকে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যানবাহনের কিছুটা চাপ থাকলেও দেখা মেলেনি যানজটের। ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে যাত্রীবাহী বাসেও ছিল না যাত্রীর চাপ। পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে কম।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঈদ যাত্রায় আগে সরকারি বন্ধ থাকায় অধিকাংশ লোকজন ২/৩ দিন আগ থেকে বাড়ি ফেরায় বড় ধরনের যানজট ছিল না।  

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, কুমিল্লা রিজিয়ন অংশে ২৬টি পয়েন্ট যানজট প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ১০২ কিলোমিটার অংশে ছিল ১২টি। কিন্তু এবার এসব অংশে কোনো যানজট দেখা যায়নি। রোববার মহাসড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, দাউদকান্দি টোলপ্লাজা, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, নিমসার বাজার, চান্দিনা বাজার ও চৌদ্দগ্রাম এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, কোথাও যানজট নেই।
  
ঢাকা থেকে আজ সকালে রওনা হয়ে  মিয়ামি পরিবহনের একটি গাড়ি কুমিল্লায় আসে প্রায় ২ঘণ্টা ১০ মিনিট পর। ওই বাসের যাত্রী লাকি আক্তার, বোরহান উদ্দিন বলেন, পুরো রাস্তায় যানজট ছিল না। কিছু এলাকা ফাঁকা। গাড়িতে কিছু আসনও খালি ছিল। 

একই বাসের যাত্রী মো.

সোহেল বলেন, আগে ভোরে বাসে উঠতাম। আর কুমিল্লায় এসে বাস থামতো দুপুরে। টোলপ্লাজায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। এখন দুই মিনিটে টোলপ্লাজা পার হয়েছি। 

কুমিল্লা-ঢাকা রোডে চলাচলকারী এশিয়া এয়ারকনের চালক মো. শাহজালাল বলেন, আগে এত দ্রুত আসা যেত না। ইফতার-সেহরি দুইটাই বাসে বসে করতে হতো। আগের রাতে রওয়ানা দিয়ে সময় মতো বাড়িতে গিয়ে ঈদের নামাজও কেউ পড়তে পারত না। ৮ বছর গাড়ি চালাই। এমন খালি সড়ক খুব কমে দেখেছি।  

কুমিল্লা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, পরিবহনের ভাষায় ঈদের আগের দিন আমরা চাঁদরাত বলি। এ দিন বাস যাত্রীদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়, যাত্রী থাকে ঠাসা। কিন্তু গত দুই দিনে এমন চিত্র তেমন ছিল না। সড়কে নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সকলের চেষ্টায় লোকজন ভোগান্তি ছাড়া নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারছে।
 
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি নুরুল আফসার সমকালকে বলেন, টোল প্লাজা নিয়ে বড় টেনশনে ছিলাম। কারণ উভয়মুখী লেনে এখানে গাড়ির জটলা হলে বড় ধরনের যানজট হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু টোল প্লাজায় আমাদের অধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। এতে আর যানজট দেখা যায়নি।   

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, গত কয়েকরাতে ঘুমাতে পারিনি। হাইওয়ের সকল পুলিশ সদস্য ঘাম ঝড়ানো শ্রম দিচ্ছে। মহাসড়কে কোনো যানজট নেই।  

তিনি আরও বলে, আমাদের ৮ শতাধিক হাইওয়ে পুলিশ ছাড়াও সারা বাংলাদেশে আমরাই প্রথম মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণে ২৩৮ রোভার সদস্যকে অস্থায়ীভাবে কাজে লাগাচ্ছি। তাদের ট্রেনিং করিয়েছি। তারা মহাসড়কের কাজের দায়িত্বে আছে। এছাড়াও সেনাবাহিনী, জেলা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন  আমাদের সহযোগিতা করছেন।  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য নজট পর বহন হ ইওয় য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

না-দেখা প্রেমের সুন্দরতার মতন

স্বপ্নের রং

বিকালের ঘুম স্বপ্নময়।
স্বপ্নে তোমার সাথে দেখা।
স্বপ্নের রং সবুজ। তারপর হালকা গোলাপি।
তোমার পরনের শাড়ির মতন। সুন্দর।
তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছিল।
তুমি বসে ছিলে। পাশ দিয়ে চলে যাবার সময় আমরা দেখেছিলাম পরস্পর।
তোমাকে ঘেঁষে আমি দাঁড়িয়েছিলাম। তোমাকে দেখছিলাম। না-দেখা প্রেমের সুন্দরতার মতন।
তুমি স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখার অনেক সমস্যা।
স্বপ্নের কোনো রং থাকে না।
তোমাকে ভালোবাসবার রং সবুজ ও গোলাপি।

বায়ুর সিংহাসন

তুমিও শিকার। আমি তার লব্ধ কারিগর।
তোমাকে তুলে এনে বাগানে রেখেছি।
প্রাকৃতিক। মায়ের শাল দুধের মতন নতুন।
অভিজ্ঞতাময়। শিহরিত অমূল্য রত্নধন।
আমি সুস্বাস্থ্যে তোমারে চেয়েছি, আপন।
পাই নাই রূপ, নিজের অরূপ কেমনে মেলে ধরি
তুমি এমন কারিগর, নিরুদ্দেশে, আজব শিকারি!
বসে থাকো, অরূপ ছায়া ধরে, ভাণ্ডে-ব্রহ্মাণ্ডে গোপন
নিরাকারে, তোমাকে আমায় দেখি, বায়ুর সিংহাসন।

ঘুম

একা একটা আকাশ মাথা বেয়ে পুকুরে এসে পড়েছিল। আমি দেখিনি! তার তীরে কিছুক্ষণ গল্পগুজব শেষে পাতা দেখছিলাম, গাছ দেখছিলাম। নৈবেদ্যসহ মায়াদেবীর মন খারাপ করা হাঁটুমোড়া ছায়া ছিল দেখছিলাম! সারা রাত কাল ছায়ারা ঘুরেছে একা। না দেখার তৃপ্তি আছে, দেখার আনন্দের চেয়েও। আমরা গাছ দেখি, পাতা দেখি—গাছের কষ্ট দেখি না। শিকড়ের আর্তনাদ দেখি না। পাতার শিরায় যেসব দুঃখরেখা সেসব দেখি না। এমনকি ভাবিও না তাদের অবহেলা ও উপেক্ষার কথা। আমরা সবাই ফুটফুটে বাচ্চার মুখের হাসির মতো আমাদের মুখ দেখতে চাই। আমরা জানি না, বেদনার শতমুখ আমাদের মুখে বসে কেমন মাতম করছে! কাল রাতে ছায়ারা জেগেছিল। তোমাকে ঘুমাতে না দেওয়ার অজুহাতে। তুমি ছিলে মাটির নিচে শিকড়ের নীরবতার মতো গহন ও বিস্তৃত ঘুমে।

ইচ্ছা

কবিতাও শাওয়ারে যাইতে চায়, তোমারে শাওয়ারে দেখতে ইচ্ছা করে। সন্ধ্যার শাওয়ার নরম হয় কি না। কত কিছু ইচ্ছা হয় হাওয়ামুখর সন্ধ্যায়। বেল ফল হিসেবে অনেক ভালো, সুস্বাদু, পরোপকারী; তারে চামড়াসহ খাইতে কত শখ, আজও মেটে নাই। তোমারে দেখার কত বাসনা! মিঠাপুকুর কেন যাওয়া হয়নি, আজও তারও কোনো কারণ নাই; অথচ দিল্লি, লরা দত্ত, আফ্রিকা, গ্রেভসের কালো কালো উত্তাপ, রাজ্য ও রাষ্ট্রে কত শাদা প্রেম রাষ্ট্র হয় জানা হয় নাই। এত কিছু না হওয়ার সাথে তোমারে দেখতে চাওয়ার যেসব মিল, তারাও পরাবাস্তব, উড়ালপ্রিয় বৃষ্টির আগে-পরে। আগে পরে কত প্লেন ওঠানামা করে, কত মন ক্ষয় হয় পূর্ণ বিষাদে, কতজন প্রিয়াঙ্গনে জড়ায়া ঘুমাতে যায়। আর তোমারে, বিউটি লাক্স, দুরন্ত কসমেটিকস, উড়ন্ত বডি স্প্রে, খয়েরি লিপস্টিক, মাশকারার আনন্দ আর কত রকমের জেল, প্রিয় রেভলনসামগ্রী, আহা জেলিফিশ, কত ভাব লয়া ঘনিষ্ঠভাবে কত উপচারে দেখে দেখে খুশিতে ক্লান্ত হয়! এই সব সুগন্ধে তাজা ভাব জাগে, মনকাড়া কবিতাও টাওয়ারে উঠে শাওয়ারে যাইতে চায়;—এই চাওয়া নিরপরাধ, ঘনিষ্ঠ, আপনায়- তোমারে শাওয়ারে চায়। অথচ আমি কোনো দিন একটাও ধরি নাই চড়াই, শালিকের লেজ। আর তোমার উত্তেজে দ্বিত্ব সত্তায় পরাবাস্তব শরীরের দিকে হেলে পড়ি, সমুদ্রজলের উচ্ছ্বাসের সমান তোলপাড়, পাড়ে পাড়ে ফেনার সমান মনে তোমার শাওয়ার আমারে ভাসায়া ডুবায়া কই থিকা কই লয়া যায়! আমার আর কিচ্ছু ইচ্ছা করে না তোমারে শাওয়ারে ছাড়া।

লীলা

আমি লীলা পরাই ছন্দে ছন্দে ভাব; আমি মরি মরি হেসে। পরাই ছন্দে হাসি, নৃত্যে ছড়াই গান সন্ধ্যাভাব বিলাসে। আমি লীলা আমার পায়ে পায়ে মদ, মত্ত চোখের উন্মাদনা আমার কণ্ঠে উথাল ঢেউ, গন্ধে বর্ণ ভাসাই অভিলাষে। আমি লীলা আনীলা পরানসখি, জড়াই বায়ু দেহে, সস্নেহে বিষ পুড়াই অন্তর, ভাব অভিনব, ওড়াই অনায়াসে। আমি লীলা দুর্লভ সংকেতে রেখে যাই সবুজ চিহ্ন, আগুন, আন্ধার, আলোর তিয়াসে। আমি লীলা সর্বনামে আপনায় আপন মদে, আপনার মাঝে আমি অরূপে রূপরে সাজাই সকাশে। আমি লীলা করি। হাসি। ভাসিয়া বেড়াই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ