সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের ৮৩তম জন্মদিন আজ
Published: 1st, April 2025 GMT
দেশবরেণ্য সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমকালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রয়াত গোলাম সারওয়ারের ৮৩তম জন্মদিন আজ মঙ্গলবার। ১৯৪৩ সালের ১ এপ্রিল আজকের এই দিনে তিনি বরিশালের বানারীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। দেশের আধুনিক সংবাদপত্রের অন্যতম কারিগর বলা হয় তাঁকে। দৈনিক ইত্তেফাকের তিন দশকের বার্তা সম্পাদক গোলাম সারওয়ার দৈনিক যুগান্তরেরও প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। সমকালের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
দেশের সাংবাদিকতার প্রতিষ্ঠানতুল্য ব্যক্তিত্ব গোলাম সারওয়ার ষাটের দশকে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। সেই থেকে টানা পাঁচ দশকের বেশি তিনি এ পেশায় মেধা, যুক্তিবোধ, পেশাদারিত্ব, দায়িত্বশীলতা, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার নিরবচ্ছিন্ন চর্চায় নিজেকে এবং বাংলাদেশের সংবাদপত্রকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেন। সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য তিনি পেয়েছেন সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকার সময় ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে গোলাম সারওয়ারের সাংবাদিকতা পেশার সূচনা। একই বছর দৈনিক সংবাদের সহসম্পাদক হিসেবে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের পর কয়েক মাস বানারীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে সিনিয়র সহসম্পাদক হিসেবে যুক্ত হন। এরপর ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত যথাক্রমে প্রধান সহসম্পাদক, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
মেধা, নিষ্ঠা ও দক্ষতায় উৎকর্ষের কারণে গোলাম সারওয়ারকে অনেকেই ‘সাংবাদিকদের শিক্ষক’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
জন্মদিন উপলক্ষে পরিবারের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার বাদ আসর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁর কবরে শ্রদ্ধা জানানো হবে। প্রয়াত সম্পাদকের জামাতা মিয়া নাঈম হাবীব জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে বানারীপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে তাঁকে স্মরণ, শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমক ল গ ল ম স রওয় র গ ল ম স রওয় র ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি দিল র্যাব, চায় সাইবার ইউনিট
অপরাধের ধরন বদলে যাচ্ছে। অভিনব কৌশলে সক্রিয় সাইবার অপরাধীরা। প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলা করা নতুন চ্যালেঞ্জ। এ জন্য স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট চেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার কর্মপরিকল্পনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। সেখানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র্যাবসহ একাধিক ইউনিট একুশ শতকের জটিল অপরাধ ও তা নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত প্রস্তুতির বিষয়টি সামনে আনে। গতকাল পুলিশের যে ইউনিটগুলো পরিকল্পনা তুলে ধরেছে, তা হলো হাইওয়ে পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), নৌ পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), শিল্প পুলিশ, র্যাব, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ ও সিআইডি।
কীভাবে প্রত্যন্ত এলাকার ভুক্তভোগী র্যাবের সহযোগিতা পেতে পারেন, সে বিষয়টি উপস্থাপন করেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান। তিনি দ্রুত গুজব প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার ওপর জোর দেন। র্যাবের জন্য আলাদা একটি সাইবার ইউনিটের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। র্যাব জনবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিজি বলেন, ‘কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও মানবাধিকার বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ র্যাব। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তদন্ত সেলকে শক্তিশালী করা হয়েছে। একটি মানবাধিকার সেলও গঠন করা হয়েছে।’
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত সূত্রের মতে, র্যাব ডিজির উপস্থাপনায় মূলত বাহিনীর অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিআইডি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়। সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি (ভারপ্রাপ্ত) গাজী জসীম অনুষ্ঠানে জানান, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী মামলার অনুসন্ধানে সিআইডি বিশেষ টিম গঠন করেছে। সাবেক মন্ত্রী, প্রভাবশালীদের সন্দেহজনক সম্পদের উৎস ও প্রকৃতি নিয়ে নিবিড়ভাবে চলছে তদন্ত। এস আলম, বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, নাবিল, ইউনিক, সিকদার গ্রুপসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা ও অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এ সময় প্রায় ৫ হাজার ৮০০ শতাংশ জমি ও হাজার কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ শনাক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফের একটি মামলায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির উপস্থাপনায় আরও বলা হয়, ফরেনসিক শাখা দিন দিন অপরাধ বিশ্লেষণের নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জনবল, সরঞ্জাম এবং অর্থের সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি সিআইডিতে আছে কাঠামোগত ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ। কোনো জেলা ইউনিটে একটিও অপারেশনাল যানবাহন নেই। এ ছাড়া অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অনিয়মিত বদলি আতঙ্ক রয়েছে। সাইবার পুলিশ সেন্টারে রয়েছে সরঞ্জামের অভাব। ফরেনসিক ল্যাবে সফটওয়্যারের জন্য বাজেট-স্বল্পতার কথা তুলে ধরেন তারা।
হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়। মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কের সিসিটিভি থেকে হাইওয়ে পুলিশ ডিজিটাল অটো ফাইন সিস্টেম, ট্রাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ক্লোন নাম্বারপ্লেট শনাক্ত, হাইস্পিড ডিটেকশন করে থাকে।
এর আগে মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে তাদের কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। সেখানে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(২) ধারায় তালিকাভুক্ত ব্যক্তিকে ডিটেনশনে (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনা বিচারে আটক রাখা) নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সে জন্য তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ডিটেনশনে নেওয়া উচিত। সরকারের অনুমতি পেলে এসবির পক্ষ থেকে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের বিস্তারিত জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে। ডিটেনশনে নেওয়ার জন্য যাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তাদের কেউ কেউ পেশাদার অপরাধী।