সুনামগঞ্জে ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৪০
Published: 1st, April 2025 GMT
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া নিয়ে বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের সিলেট ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, জামালপুর গ্রামের লেবু মিয়া ও রাজ উদ্দিনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে জমি দিয়ে বিরোধ চলছিল। কয়েক দিন আগে স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধান করে দেন। ঈদের দিন সোমবার লেবু মিয়ার পক্ষের একজন প্রতিপক্ষের লোককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে উভয়পক্ষের লোকজন সকাল ১১টার দিকে লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে গোলগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবদ্ধসহ ৪০ জন আহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় সালিশে অংশ নেওয়া ব্যক্তিসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা সিলেট ও জগন্নাথপুরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা.
জগন্নাথপুর থানার ওসি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ সব ক প স ট আহত ফ সব ক স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর লুট হওয়া বই ফেরত পেয়েছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগার কর্তৃপক্ষ। রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুপক্ষের সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে লুট হওয়া প্রায় চার শতাধিক বই পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে ফেরত দেওয়া হয়।
এর আগে, পাঠাগারে ‘নাস্তিকদের’ বই, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে লুট শিরোনামে সংবাদ প্রচার হয় দেশের শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে। এরপরই প্রশাসন বই ফেরতের উদ্যোগ নেয়।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এই সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সায়েম ইমরান, ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শহিদুল্লাহ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি খায়রুল মুন্সী, উপজেলা জামায়াতের আমির মিজানুর রহমান, অভয়ারণ্য পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র, সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র ঘোষ, ইসলামী খেলাফত মজলিশের নেতা গোলাম রব্বানী এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।
উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভার শুরুতে ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদ উভয়পক্ষকে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। পরে পাঠাগারের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ কীভাবে বইগুলো পাঠাগার থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, তার বর্ণনা তুলে ধরেন। পরে যেসব যুবক বই নিয়ে আসার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের পক্ষ থেকে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী রিশাদ বক্তব্য দেন। বৈঠকে পাঠাগারে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত বই বা নাস্তিক্যবাদ প্রচারের বই রয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে বইগুলো অভয়ারণ্য পাঠাগারে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গোলাম রব্বানী রিশাদ বলেন, ‘‘পাঠাগার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান করেছি, তারা যেন কোনো ধর্মবিরোধী বা নিষিদ্ধ বই পাঠাগারে না রাখেন।’’
পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘পাঠাগারে কোনো ধর্মবিরোধী বই ছিল না। সেদিন যে বইগুলো নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, জাফর ইকবাল প্রমুখের বই ছিল।’’
ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘‘উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। দুই পক্ষই বৈঠকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এসেছিলেন। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে বইগুলো পাঠাগারে দিয়ে আসা হয়েছে।’’
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ধনবাড়ী উপজেলা খেলাফত যুব মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে একদল যুবক গিয়ে প্রায় চার শতাধিক বই লুট করেন। পরে বইগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন তারা। সেদিন দাবি করা হয়েছিল, বইগুলো ধর্মবিরোধী।
ঢাকা/কাওছার/রাজীব