কৃষক রাসেল মিয়া ও রফিকুল ইসলামের নিজেদের ধানি জমি আছে। কিন্তু তাঁদের জমির ধান পাকতে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। তাঁদের বাড়িতে থাকা গরুর খাবারের জন্য খড় দরকার। কিন্তু পুরোদমে ধান কাটা মৌসুম শুরু না হওয়ায় বাজারে এখন খড় পাওয়া কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে নিজেরা শ্রমিক না হলেও খড়ের বিনিময়ে ধান কাটা উৎসবে যোগ দিয়েছেন তাঁরা।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পানান বিলে প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন মধ্য লাখুহাটি এলাকার কৃষক হারুন মিয়া। তাঁর জমির ধান একটু আগেভাগেই পেকে গেছে। তিনি জমির ধান কাটার ঘোষণা দিতেই কৃষক রাসেল মিয়াসহ আশপাশের যেসব কৃষকের গরু আছে, তাঁরা দল বেঁধে খড়ের বিনিময়ে ধান কাটতে জমিতে ভিড় করেন।

এভাবে প্রতিবছর যাঁদের ধান আগেভাগে পেকে যায়, অন্য কৃষকেরা খড়ের বিনিময়ে তাঁদের জমির ধান কেটে দেন। শুক্রবার হোসেনপুরের পানান বিলে গিয়ে এমন উৎসবমুখর পরিবেশে কৃষকদের ধান কাটতে দেখা যায়। কৃষকেরা জানান, খড়ের বিনিময়ে ধান কাটার বিষয়টা তাঁদের কাছে উৎসবের মতো লাগে। খড়ের বিনিময়ে ধান কাটার উৎসবটি পানান বিলে আজ থেকে শুরু হয়েছে। দুই থেকে তিন দিন এ উৎসব চলবে। পুরোদমে ধান কাটার মৌসুম শুরু হলে তখন আর এ সুযোগ থাকে না।

আজ সকালে পানান বিলে গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ ধান কাটছেন, কেউ ধান ঝেড়ে খড় আলাদা করে স্তূপ করে রাখছেন। কেউ কেউ মাথায় ও সাইকেলে করে কিছু খড়ের মুঠি নিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। তাঁরা কেউ ধান কাটার শ্রমিক নন। সবারই কমবেশি ধানি জমি আছে। মূলত বাড়িতে থাকা খড়ের জন্য তাঁরা ধান কেটে দিচ্ছেন। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হচ্ছেন। জমির মালিকের শ্রমিকের খরচ বেঁচে যাচ্ছে।

খড়ের বিনিময়ে ধান মাড়াই করে দিচ্ছেন অন্য কৃষকেরা। শুক্রবার সকালে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের পানান বিলে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক