মোটরসাইকেল নিয়ে ধাওয়া করা তরুণদের ছোড়া ইটের আঘাতে গুরুতর আহত একুশে পরিবহনের বাসচালক মো. সোহেলের অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। নোয়াখালীর মাইজদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

এদিকে পুলিশ বলছে, মোটরসাইকেলকে পাশ না দেওয়ায় ওই তরুণেরা বাসটির চালকের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে জেনেছে তারা।

যোগাযোগ করা হলে মাইজদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজীব আহমেদ আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, সোহেলের মাথা ও চোয়ালে ৩১টি সেলাই লেগেছে। ভেঙে গেছে নিচের পাটির দুটি দাঁত। তবে তাঁর অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।

আরও পড়ুনমধ্যরাতে মোটরসাইকেল নিয়ে ধাওয়া, ৪০ কিলোমিটার বাস চালিয়ে যাত্রীদের রক্ষা১২ ঘণ্টা আগেমামলার বিষয়ে পুলিশ সুপার মো.

খায়রুল আলম বলেন, হাইওয়ে পুলিশের মামলা নেওয়ার কিংবা তদন্ত করার ক্ষমতা নেই।

গত সোমবার মধ্যরাতে একুশে পরিবহনের যাত্রীবাহী ওই বাস ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে যাচ্ছিল। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পার হলে ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেলে করে একদল তরুণ বাসটির অনুসরণ শুরু করেন। প্রায় ৪০ কিলোমিটার বাসটিকে ধাওয়া করেন তাঁরা।

বাসটিকে থামাতে না পেরে মোটরসাইকেলের আরোহীরা প্রথমে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর ছাতারপাইয়া রাস্তার মাথায় ওপর বেগমগঞ্জের আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজের সামনে চালক সোহেলকে উদ্দেশ্য করে ইট ছোড়েন। এতে তাঁর চোয়াল থেঁতলে যায়। কিন্তু যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাস চালিয়ে যান তিনি। এতে রক্ষা পান যাত্রীরা। পরে তাঁকে মাইজদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বাসচালকের সহকারী মোহাম্মদ রাহাত বলেন, দুই দফায় ইটের আঘাত লাগে সোহেলের মাথায়। তবু তিনি থেমে যাননি। প্রথম আঘাতের পর তাঁর মুখ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। কিন্তু যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁরা বাস চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনা এড়াতে পথে কোনো যাত্রীকে নামতে দেইনি। বাসটি সরাসরি নোয়াখালীর সুধারাম থানার সামনে গেলে সব যাত্রী দ্রুত থানায় ঢুকে পড়েন।’

বাসমালিক মো. জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান তিনি। কিন্তু থানা থেকে সোনাইমুড়ী থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সোনাইমুড়ী থানা থেকে আবার লাকসাম থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা ডাকাত নন। ঘটনাস্থলের একটি দোকানের সামনের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) ফুটেজে দেখা গেছে, ঈদের দিন সোমবার রাতে দোকানের সামনে একদল তরুণ ঈদ উদ্‌যাপন করছেন। এ সময় তাঁদের মোটরসাইকেলকে সাইড না দিয়ে একুশে পরিবহনের বাসটি চালানো হচ্ছিল। তারা বাসটি থামাতে চাইলে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। এ অবস্থায় ৮-১০টি মোটরসাইকেল আরোহীরা বাসটি ধাওয়া করেন।’

মামলার বিষয়ে মো. খায়রুল আলম বলেন, হাইওয়ে পুলিশের মামলা নেওয়ার কিংবা তদন্ত করার ক্ষমতা নেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। পরে আপডেট জানাব।’ তবে তিনি বলেন, বাসটির মালিক জহিরুল ইসলাম তাঁর কার্যালয়ে এসেছেন। তিনি মামলা দিতে চাইলে তা গ্রহণ করা হবে।

[প্রতিবেদনটি করতে সহায়তা করেছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ