প্রাচীন মিসর সব সময় রহস্যে ঘেরা। এই রহস্য উদ্‌ঘাটনে শতাধিক বছর ধরে চেষ্টা করে আসছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। অজানা বহু তথ্য জানতে পেরেছেন তাঁরা। অনেক কিছু জানার চেষ্টা চলছে। বর্তমানে মিসরের রহস্যময় এক ফারাও বা সম্রাটের সমাধি নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে গবেষকদের মধ্যে।

গত জানুয়ারিতে ওই সমাধির সন্ধান পাওয়া যায় মিসরের আবিদোস শহরে। সমাধিতে বেশ কয়েকটি কক্ষ রয়েছে। প্রবেশপথ বেশ সজ্জিত। তবে সমাধিতে চোরদের হামলার কারণে ইটের দেয়ালে হায়েরোগ্লিফিক বর্ণে লেখা অনেক তথ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া সমাধির মধ্যে কোনো মরদেহও পাওয়া যায়নি। ফলে সেখানে কোন ফারাওয়ের কবর দেওয়া হয়েছিল, তা জানা যায়নি।

গত ২৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ায় অবস্থিত পেন মিউজিয়ামের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষকেরা ধারণা করছেন, খ্রিষ্টপূর্ব ১৬৪০ থেকে ১৫৪০ শতকের মধ্যে কোনো ফারাওয়ের সমাধি এটি। তখন মিসরে আবিদোস রাজবংশের শাসন চলছিল। এই রাজবংশ সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া যায়। তাদের তথ্য এখন গবেষকদের কাছে রহস্যে ঘেরা।

নতুন পাওয়া সমাধিটি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৩ ফুট নিচে খুঁজে পাওয়া গেছে। সেখানে প্রাচীন একটি সমাধিক্ষেত্র রয়েছে, যা ‘মৃতদের নগরী’ নামে পরিচিত। মিসরের পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, আবিদোস শহর প্রেতলোকের দেবতা ওসিরিসের শেষ বিশ্রামের (মৃত্যু–পরবর্তী সময়) স্থান। এ জন্য মিসরের অনেক ফারাও মৃত্যুর পর এই স্থানকে সমাধি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

এক দশকের বেশি সময় আগে এখানেই আবিদোস রাজবংশের আরেক ফারাওয়ের সমাধি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ফারাওয়ের নাম সেনেব-কে। বর্তমানে খুঁজে পাওয়া সমাধিটি তার চেয়ে বড়। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান সমাধির ফারাও সেনেব-কের পূর্বসূরি ছিলেন।

মিসরের রাজধানী কায়রোয় অবস্থিত আমেরিকান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সালিমা ইকরাম বলেন, আবিদোস রাজবংশের নতুন আরেকজন শাসনের সমাধি খুঁজে পাওয়াটা চমৎকার একটি বিষয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রহস য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ