যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বাণিজ্য আলোচনা’ করতে চায় অর্ধশতাধিক দেশ
Published: 7th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর ‘বাণিজ্য আলোচনা’ করতে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে অর্ধশতাধিক দেশ। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও হোয়াইট হাউসের জাতীয় অর্থনৈতিক পর্ষদের পরিচালক কেভিন হেসেট এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
স্থানীয় সময় রোববার সকালে এবিসি নিউজকে কেভিন হেসেট বলেছেন, গত রাতে আমি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর থেকে প্রতিবেদন পেয়েছি। যেখানে ৫০টির বেশি দেশ সমঝোতা আলোচনা শুরু করতে প্রেসিডেন্টের দ্বারস্থ হয়েছে।’
আরেক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, গত বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাল্টা শুল্কের ঘোষণা দেওয়ার পর ৫০টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা শুরু করেছে।
তবে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করা দেশগুলোর নাম ও সমঝোতা আলোচনা নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি মার্কিন কর্তারা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একসঙ্গে এত বেশি সংখ্যক দেশের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা চালিয়ে নেওয়া ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে। এছাড়া কত দিন ধরে এই আলোচনা চলবে, সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং–তে রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে দেশটির ওপর থেকে শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ক্ষেত্রে সব ধরনের বাণিজ্য বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাইওয়ানের কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বাড়াবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বেসেন্ট বলেছেন, ‘তিনি (তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট) নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য সর্বোচ্চটা করেছেন।’
ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ধারণার চেয়ে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির উল্লেখ করেছেন তিনি।
স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ‘শুক্রবার আমরা কর্মসংস্থানের সংখ্যা দেখলাম, যেটা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। এভাবে আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি। তাই আমি কোনো কারণ দেখি না যে আমাদের মন্দার মধ্যে পড়তে হবে।’
ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে ধাক্কা তৈরি হয়েছে এবং এতে বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ ও অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প ট বল ছ ন সমঝ ত
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।