শেরপুরে বিএনপি নেতা জাকারিয়া বাদল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা শহরের বিক্ষোভ মিছিল শেষে কালেক্টরেট চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। কর্মসূচি শেষে পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
এতে অংশ নেন নিহত বাদলের স্ত্রী ও সন্তানসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগে সকালে ভীমগঞ্জ থেকে কয়েকশ মানুষ মিছিল নিয়ে ৯ কিলোমিটার হেঁটে শহরে আসেন। এ সময় তারা কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির বহিষ্কৃত আহ্বায়ক মো.

লুৎফর রহমানসহ আসামিদের শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাদলের স্ত্রী পপি বেগম। এ সময় তাদের ছয় বছরের ছেলে তাবিব প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘বাবা হত্যার বিচার চাই’। বাদলের স্ত্রীর কান্না আর ছোট ছেলের বাবা হারানোর কষ্ট উপস্থিত সবাইকে অশ্রুসিক্ত করে তোলে।
পপি বেগম বলেন, বাদলের খুনের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত না ধরলে তারা দেশ ছেড়ে পালাবে। তিনি এমন তথ্য পেয়েছেন। পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার সময়ও তিনি এমন আশঙ্কার কথা জানান। 
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক পরিবেশ সম্পাদক হাসানুর রেজা জিয়া, তাঁতী দলের সভাপতি লালন মোল্লা, উপজেলা কমিটিরর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু, ছাত্রদলের সাবেক নেতা মাসুদ হাসান বাদল প্রমুখ।
জানা গেছে, সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জাকারিয়া বাদলকে ভীমগঞ্জ মাদ্রাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আহত হন তাঁর দুই সহকর্মী। তিনি সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজের এজিএস ছিলেন। ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমানের সঙ্গে বিরোধ ছিল বাদলের।
এ ঘটনায় নিহত বাদলের স্ত্রী পপি বেগম বাদী হয়ে ২৩ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। গত ১ মার্চ উপজেলা বিএনপি লুৎফরকে বহিষ্কার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ২৩ আসামির মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামি নুর আলম অন্য মামলায় আগে থেকেই কারাগারে। লুৎফরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব দল র স ত র ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’